উদাসীনতা: এ ভাবেই পড়ে থানার জিম। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
জিম আছে থানাতেই। তবে তালাবন্ধ। জিম যে আছে, খবর নেই সিংহভাগ পুলিশকর্মীর কাছেই। কমিশনারেটের কর্তারাও অনেকে জিমের কথা জানেন না। তার মধ্যে আবার পুলিশের সেই জিম থেকে ব্যায়ামের যন্ত্রপাতি চুরি হয়েছে। যার জেরে বিধাননগর (উত্তর) থানা জিমে এখন আর যখন-তখন যাতায়াতের সুযোগ নেই। ফলে যে ক’জন কর্মী কখনও-সখনও জিমে যেতেন, তাঁদেরও শারীরচর্চার উৎসাতে ভাটা পড়েছে।
একটি মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিশকর্মীদের উচ্চতার সঙ্গে দেহের ওজনের ভারসাম্য ঠিক আছে কি না, স্বরাষ্ট্র সচিব ও রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তা হলফনামা দিয়ে জানাতে বলা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ ইতিমধ্যে হলফনামা দিতে পারলেও জেলা পুলিশের সম্পর্কে রিপোর্ট এখনও ডিজির কাছে এসে পৌঁছোয়নি বলে সম্প্রতি হাইকোর্টকে জানান সরকারি কৌঁসুলি। তার পরেই খোঁজ পড়ে বিধাননগর (উত্তর) থানার ওই জিমের। কী হাল সেটির? তার হদিস করতে গিয়েই উঠে এল নানা তথ্য।
পুলিশ সূত্রে খবর, উর্দিধারী পুলিশেরা ওই জিমে তেমন যাতায়াত না করলেও, কয়েক মাস আগে পর্যন্ত সিভিক পুলিশকর্মীরা জিমে গিয়ে শারীরচর্চা করতেন। তখন এক দিন জানা যায়, জিম থেকে বেশ কিছু সরঞ্জাম গায়েব হয়ে গিয়েছে। তার পরেই সিভিক পুলিশদের সেখানে ব্যায়াম করা বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। আপাতত জিমের দরজায় তালা। মাঝেমধ্যে উর্দিধারী পুলিশকর্মী গেলে থানার মেজবাবুর থেকে চাবি নিয়ে জিম করার সুযোগ পান।
কমিশনারেট তৈরির আগে সল্টেলেকের থানাগুলি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের অধীনে থাকার সময়ে জিমটি তৈরি হয়েছিল। বহু আধুনিক সরঞ্জাম আছে সেখানে।
বিধাননগর কমিশনারেট সূত্রে খবর, জিমের খবর জানেন না বহু পুলিশকর্মীই। এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সুযোগ পেলে জিমে ঢুকি। সকলে জানেও না যে জিম আছে।’’
কমিশনারেটের এক কর্তাও জিমটির কথা শুনে অবাক। তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘‘জিমে সব সরঞ্জাম আছে? তবে তো সল্টলেকের থানাগুলির কর্মীদের শারীরচর্চায় উৎসাহ দেওয়া যেতেই পারে।’’ পুলিশকর্তাদের পাল্টা বক্তব্য, শুধু ওই একটি জিম দিয়েই তো কমিশনারেটের ১০টি থানা এবং ১০টি পুলিশ আউট পোস্টের কর্মীদের শারীরচর্চার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘পুলিশকর্মীদের শারীরচর্চায় মনোনিবেশ করানোর কিছু পরিকল্পনার কথা ভাবা হয়েছে।’’