ভিড় এড়িয়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের দুর্গাপ্রতিমা দেখানোর ভাবনাচিন্তা করছে কলকাতা পুলিশ। শনিবার বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের অভিভাবকদের নিয়ে হওয়া এক আলোচনাচক্রে এ কথা জানান কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের ডিসি মুরলীধর শর্মা। পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার চলতি বছরে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করতে চলেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মুরলী সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন ওই আলোচনাচক্রে। সেখানেই মুরলী জানান, নিজেও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানের বাবা তিনি। পুজোর সময়ে বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘গত পুজোয় ত্রিধারা সম্মিলনীতে ডিউটি করছিলাম। দেখি, ভিড়ের মধ্যে প্রবল চিৎকার হচ্ছে। এক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন সন্তানকে নিয়ে ঠাকুর দেখতে এসে সমস্যায় পড়েছিলেন তার মা। কোনও রকমে তাঁদের বার করে অতিথিদের প্রবেশ পথে ঠাকুর দেখার ব্যবস্থা করে দিই আমরা।’’ মুরলীর দাবি, ‘‘ভিড়ের মধ্যে থেকে বিশ্রী ভাষায় নানা কথা উড়ে আসছিল ওই মহিলার দিকে। অনেকেরই দাবি, এই ধরনের বাচ্চাদের নিয়ে কেন ঠাকুর দেখতে এসেছেন মহিলা! খুব খারাপ লেগেছিল। নিজে বাবা হিসেবে বিষয়টা অনুভব করেছি। সিপি-কে অনুরোধ জানিয়েছিলাম। তিনি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন বিষয়টি।’’
তিনি জানান, অতিথিদের পাশাপাশি ওঁদের জন্য পৃথক প্রবেশ পথের বন্দোবস্ত করতে বলা হচ্ছে পুজো কমিটিগুলিকে। পুজো কমিটিগুলোর সঙ্গে আসন্ন বৈঠকে বিষয়টিকে পরিকল্পনার তালিকায় রাখা হয়েছে। কলকাতা পুলিশের তরফে আলাদা করে ওই পথের তদারকিও করা হবে বলে জানিয়েছেন মুরলী। প্রতি বছরই কলকাতার বিভিন্ন পুজো কমিটি বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য নানা ধরনের ব্যবস্থা রাখে।
বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটি এ বছর নিজেরাই বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য পৃথক প্রবেশ পথের ব্যবস্থা করেছে। তবে এগুলো সবই ব্যক্তিগত উদ্যোগে। এ বছর পুলিশের তরফেই এ ব্যাপারে জোর দেওয়া হবে। বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সাধারণ সম্পাদক দীপককুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুজো সকলের। তাই এ বার আমরা পৃথক পথের ব্যবস্থা রাখছি। কলকাতা পুলিশের এই উদ্যোগের জন্য স্বাগত।’’