সাউথ পয়েন্ট স্কুলের ছাত্র রাজন্য সরকারের মৃত্যু নিয়ে ফের তদন্ত চাইছে তার পরিবার। সোমবার আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে এ জন্য আবেদনও জানান রাজন্যের মা রুচিরা সরকার। তিনি জানান, গড়িয়াহাট থানা তাঁর ছেলের মৃত্যু নিয়ে যথাযথ তদন্ত করেনি। সঠিক তথ্যও বেরিয়ে আসেনি। রুচিরাদেবীর আবেদন গ্রহণ করেছে আদালত। আদালত সূত্রে খবর, পরবর্তী শুনানি আগামী ৫ অগস্ট।
২০১৪-র ৮ মে সকালে সাউথ পয়েন্ট স্কুলের তিন তলায় কম্পিউটার ক্লাসের সামনে রাজন্যকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখেন দুই শিক্ষিকা। প্রথমে স্কুলের ‘সিক রুম’ ও পরে তাকে স্কুলবাসে করে নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা রাজন্যকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই ঘটনায় স্কুল-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তোলেন রুচিরাদেবী।
দেড় বছর এই ঘটনার তদন্ত চলার পরে গত বছরের শেষে আদালতে রিপোর্ট জমা দেয় গড়িয়াহাট থানা। তাতে স্কুলের গাফিলতি মেলেনি। রিপোর্টে রাজন্যের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে দায়ের করা অভিযোগকে ‘মিসটেক অব ফ্যাক্ট’ বলে দাবি করেন তদন্তকারীরা। এ দিকে, আদালতে পেশ করা আর্জিপত্রে রুচিরাদেবী জানিয়েছেন, গড়িয়াহাট থানা রাজন্যের অভিভাবকদের বয়ান নথিভুক্ত করেনি, তার চিকিৎসা সংক্রান্ত পুরনো কাগজও সংগ্রহ করেনি। স্কুলে রাজন্য কতক্ষণ পড়েছিল বা স্কুলে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের অধীনে মেডিক্যাল কেয়ার ইউনিট ছিল কি না, তা-ও দেখেনি। তদন্তে বাজেয়াপ্ত করা নথিপত্রও পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ।
সোমবার রাজন্যের পরিবারের আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বলেন, ‘‘আমরা চাই গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা ফের তদন্ত করুক। তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রাজন্যের পরিবার।’’ অনির্বাণবাবু জানান, স্কুলে তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো হলেও বাসে খুলে ফেলা হয়। কেন অ্যাম্বুল্যান্স না ডেকে স্কুলবাসে নিয়ে যাওয়া হল, কেন মাস্ক খোলা হয়, সে প্রশ্নও তুলেছে পরিবার।
তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ পুলিশ। তারা জানায়, রাজন্যকে উদ্ধার ও নার্সিংহোমে নেওয়া, সব ঘটে ১২ থেকে ১৫ মিনিটে। ময়নাতদন্তের পরে ভিসেরা পরীক্ষা হয়, কথা বলা হয় বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও। কিন্তু খুন বা গাফিলতির জেরে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়নি। সেই ভিত্তিতেই আদালতে রিপোর্ট পেশ করা হয়।