—প্রতীকী চিত্র।
বহুতল বা আবাসনে ডেঙ্গি বা জ্বরে আক্রান্ত হওয়া এবং তার জেরে মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছিল গত বছরে। একাধিক আবাসনে পর্যবেক্ষণে গিয়ে বিপুল পরিমাণে লার্ভার সন্ধানও পেয়েছিলেন পুরকর্মীরা। এ বছর তাই প্রথম থেকেই মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে জোর বাড়িয়েছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা। সেই সূত্রে সম্প্রতি একাধিক আবাসনের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেখানে ডেঙ্গি রুখতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিনিধিরাও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর। তবে যে ভাবে পুর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে, তাতে এমন বৈঠক করে আদৌ কাজের কাজ হবে কি না, সেই প্রশ্নও থেকে যাচ্ছে।
চলতি বছরের শুরু থেকে মশা নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু হয়েছে দক্ষিণ দমদমে। যদিও ইতিমধ্যেই দু’মাসে পাঁচ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর। এ ছাড়া সাধারণ জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও রয়েছে। গত বছরের সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দক্ষিণ দমদমে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি বাসিন্দা জ্বর এবং ডেঙ্গিতে সংক্রমিত হয়েছিলেন। যদিও বেসরকারি মতে, সেই সংখ্যাটা ছিল প্রায় পাঁচ হাজার। জ্বর এবং ডেঙ্গি মিলিয়ে মৃত্যু হয় আট জনের।
পুর আধিকারিকদের একাংশের কথায়, ‘‘পুর এলাকায় অসংখ্য বহুতল বা আবাসন রয়েছে। গত বছরের অভিজ্ঞতায় দেখা গিয়েছে, বেশ কিছু ক্ষেত্রে সেই সব জায়গায় সচেতনতার অভাব রয়েছে। নিকাশি নালা থেকে শুরু করে বেসমেন্ট, বারান্দায় রাখা টব, ফ্রিজ থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় লার্ভার সন্ধান মিলেছিল।’’
যদিও বহুতলের বাসিন্দাদের একাংশের মতে, মশাবাহিত রোধ প্রতিরোধে যতটা ব্যবস্থা থাকা উচিত, তা অনেক সময়েই তাঁদের থাকে না। পুরসভা জানিয়েছে, ডেঙ্গি রোধে প্রয়োজনীয় সব রকমের সহযোগিতা করা হবে। তবে বাসিন্দারা নিজেরা সচেতন না হলে শুধু পুরসভার পক্ষে এই সমস্যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রাখা মুশকিল। গত বছরে পুরসভা ডেঙ্গি রুখতে অনেকটা দেরিতে তৎপর হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। তাই এ বার শুরু থেকেই আবাসন বা বহুতলগুলিতে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
তবে পুরকর্মীদের একাংশ এমনও অভিযোগ করছেন, বহুতল বা আবাসনে কাজ করতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে অসহযোগিতার মুখে পড়তে হয় তাঁদের। এ প্রসঙ্গে একটি বহুতলের এক বাসিন্দা শ্যামল দত্ত বলেন, ‘‘পুরসভা আগে থেকে আবাসন কমিটিকে আভাস দিয়ে রাখলে তাদের প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট সময়ে হাজির থাকবেন। তাতে তাঁরা পুরকর্মীদের সহযোগিতা করবেন।’’ পুরসভা জানিয়েছে যে, বাসিন্দাদের সঙ্গে সমন্বয় করেই মশা নিয়ন্ত্রণের কাজ চালানো হবে।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) সঞ্জয় দাস জানান, এ বছরের শুরু থেকেই আবাসনগুলিতে মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। সেই সূত্রে আবাসনের বাসিন্দাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধে সকলের ভূমিকা সম্পর্কে জানানো হয়েছে। বাসিন্দারাও সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।