বাড়িতে প্রভাস সাহা ও কৃষ্ণা সাহা। বাঁশদ্রোণীতে, শনিবার। নিজস্ব চিত্র
পৈতৃক বাড়ি ছাড়তে হবে। প্রশান্ত সাহাকে নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সেই মতো শনিবার বেলা দেড়টা নাগাদ স্ত্রী পম্পা সাহাকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
বাঁশদ্রোণীর বাসিন্দা প্রভাস সাহা ও তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণা সাহা মাস দুই আগে ছেলে প্রশান্ত ও বৌমা পম্পার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ দায়ের করে মামলা করেছিলেন আলিপুর আদালতে।
শুক্রবার বিচারক পবিত্র সেন নির্দেশ দিয়েছিলেন, বাড়ি ছাড়তে হবে প্রশান্ত এবং পম্পাকে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাঁশদ্রোণী থানার ওসি-কে নির্দেশ কার্যকর করার কথা জানানো হয়েছিল। এ দিন আদালতের নির্দেশ মেনে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান প্রশান্ত ও পম্পা।
ছেলে-বৌমা বাড়ি থেকে বেরোনোর পরে বাবা বলেন, ‘‘রোজ যা সহ্য করতাম! ভালই হল, একা থাকব।’’ আর মায়ের কথায়, ‘‘নিজে না খেয়ে ওর মুখে খাবার তুলে দিয়েছিলাম এ দিনটা দেখার জন্য!’’
বৃদ্ধ দম্পতির অভিযোগ, ছেলে কখনও টিউবলাইট ভেঙে মারতে যেতেন, কখনও আবার খাবারের থালা ছু়ড়ে ফেলে দিতেন। ক্রেতাদের সামনে বাবাকে দোকানের কর্মচারী বলে পরিচয় দিতেন বলেও অভিযোগ। এমনকী, ছেলে ও বৌমা এক সপ্তাহের জন্য দার্জিলিং বেড়াতে যাওয়ার সময়ে বাবা-মায়ের হাতে যৎসামান্য টাকা দিয়ে বলেছিলেন, চালিয়ে নিতে হবে। দীর্ঘদিনের ‘অত্যাচারের’ জেরে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন তাঁরা। আদালতের নির্দেশে তাঁরা কৃতজ্ঞ বলেই এ দিন জানিয়েছেন ওই দম্পতি। কৃষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘ঈশ্বর আমাদের দেখবেন। আর কাউকে দরকার নেই। যে যন্ত্রণায় রোজ ভুগতে হত। বেঁচে গেলাম। এত অপমান সহ্য করে বেঁচে থাকা যায় না।’’
তবে, তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে মুখ খুলতে চাননি প্রশান্ত ও পম্পা। প্রশান্তের কথায়, ‘‘বাবা-মা সম্পর্কে কোনও কথা বলতে চাই না।’’