—প্রতীকী ছবি।
মধ্যরাতে মোটরবাইক চড়ে আসা দুষ্কৃতীরা প্রথমে পথ আটকে দাঁড়ায়। তার পরে মাটির দিকে গুলি চালিয়ে লক্ষাধিক টাকা ভর্তি ব্যাগ ছিনতাই করে চম্পট দেয়। বুধবার রাত ১২টা নাগাদ পাটুলি থানা এলাকার বাঘা যতীন স্টেশনের কাছে এমন নাটকীয় ভাবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মোটরবাইকে করে এসে দুই দুষ্কৃতী এক ব্যবসায়ীর থেকে ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা ভর্তি দু’টি ব্যাগ কেড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়।বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বাঘা যতীন স্টেশনের কাছে মুদির দোকান চালান গোপাল কুণ্ডু। ওই রাতে তিনি দোকান বন্ধ করেমেজো ভাই প্রণবের সঙ্গে সাইকেল নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। সঙ্গে ছিলেন দোকানের আরও তিন কর্মী। পুলিশ জানিয়েছে, দোকানের কাছেই সিপিএমের পার্টি অফিসেরসামনে আসতে একটি মোটরবাইক তাঁদের সামনে এসে দাঁড়ায়। সেই বাইকের দুই আরোহীর মাথায় হেলমেট ছিল। তদন্তকারীরা জানান, মোটরবাইকে করে দুষ্কৃতীরা আগে থেকেই ওই ব্যবসায়ীর উপরে নজর রেখেছিল।গোপালের কাছ থেকে টাকার ব্যাগ দু’টি ছিনতাই করার উদ্দেশ্যে তাঁর সামনেই মোটরবাইক দাঁড় করায় দুষ্কৃতীরা। এর পরে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের কাছেঅভিযোগকারীরা জানান, ব্যাগ কেড়ে নেওয়ার সময়ে বাধা দিলে বাইকচালক পকেট থেকে পিস্তল বার করে ভয় দেখায়। পিছনে বসা আরোহীর হাতেও ধারালো অস্ত্র ছিল। পুলিশজানিয়েছে, ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর সঙ্গীরা ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। দুই ভাই মাটিতে পড়ে যান। এর পরে এক দুষ্কৃতী রাস্তার দিকেতাক করে এক রাউন্ড গুলি চালিয়ে দেয়। তার পরেই টাকা ভর্তি দু’টি ব্যাগ কেড়ে নিয়ে বাইপাসের দিকে মোটরবাইক নিয়ে পালায় তারা।
বুধবার রাতের এই ঘটনার পরে এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ঘটনাস্থলটি কলকাতাপুরসভার ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। স্থানীয় পুরপ্রতিনিধি বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্তের কথায়, ‘‘ছোটখাটো চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা আগে ঘটলেও এই ধরনের বড় ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। রাস্তার ওই ঘটনাস্থলের এক প্রান্ত যাদবপুরও অন্য প্রান্ত পাটুলি থানার অন্তর্গত। রাতে এলাকায় পুলিশি টহল বাড়াতে দুই থানার ওসিকে বলেছি।’’
এ দিকে, এই ঘটনার পরে গোপাল বা প্রণব, কেউই কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। ওই রাতে তাঁরা বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁরা পাটুলি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। এ দিন দিনভর পুলিশ ওই পাঁচ জনের থেকে পুরো ঘটনার বিবরণ নিয়েছে। লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখার আধিকারিকেরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পাটুলি থানায় গিয়ে অভিযোগকারীদের সঙ্গে বিস্তারিত কথাও বলেন তাঁরা। দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করতে পুলিশ ওই ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখছে।