প্রতীকী ছবি।
পলতায় গঙ্গার যে অংশ থেকে অপরিস্রুত জল তুলে পরিশোধন করে সরবরাহ করা হয়, সেখানে ভাঙন শুরু হওয়ায় জল সরবরাহ বিপর্যস্ত হওয়ার আশঙ্কা ছিল। ওই ভাঙন আটকাতে কলকাতা পুরসভা প্রকল্প গ্রহণ করলেও লকডাউনের কারণে আটকে গিয়েছে সেই কাজ। ফলে আগামী বছরের মধ্যেই যে কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হয়েছিল, তা এখন কার্যত অসম্ভব বলেই মনে করছেন পুরকর্তারা।
কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, গঙ্গার ওই ২০০ মিটার জায়গা যাতে হঠাৎ ভেঙে না পড়ে, সে জন্য আপাতত পুরনো পদ্ধতিতে শালবল্লা দিয়ে কিছুটা ভাঙন রোধ করা গিয়েছে। কিন্তু এর স্থায়ী সমাধানের জন্য যে পদ্ধতি অবলম্বন করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেই কাজ আপাতত পিছিয়ে গেল।
পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গঙ্গার ওই অংশে পাড় বাঁধানোর জন্য ‘শিট পাইলিং’ পদ্ধতি ব্যবহারের কথা ভাবা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে স্টিলের পাত পর পর বসিয়ে পাড়ের ধারে দেওয়াল তৈরি করা হবে, যাতে জলের ধাক্কায় তা কোনও ভাবে ভেঙে না যায়। শালবল্লা বসিয়ে ভাঙন আটকানোর পদ্ধতি অনেকটাই পুরনো এবং তা দিয়ে চিরকাল ভাঙন আটকানো সম্ভব নয়। তাই নদীর পাড় শক্তিশালী করতে এই ধরনের আধুনিক পদ্ধতির কথা ভাবা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের জন্য বিদেশ থেকে ইস্পাতের পাত এসে পৌঁছতে পারেনি। সম্প্রতি সেগুলি এলেও এখনও ওই ধাতব পাতগুলির গুণগত মান কেমন, সেই পরীক্ষা আটকে রয়েছে। এ ছাড়াও শ্রমিক না পাওয়ার সমস্যা তো আছেই। সব মিলিয়ে আটকে রয়েছে নদীপাড়ের ভাঙন আটকানোর কাজ।
পুরসভার জল সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, পলতায় গঙ্গার একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে জল তুলে পরিশোধন করে টালার জলাধারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণ কলকাতার একাংশে জল সরবরাহ হয়। পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, পলতায় দৈনিক প্রায় ২ কোটি ৬২ লক্ষ গ্যালন জল পরিশোধন করা হয়।
পুর আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, নদীর পাড় ভাঙলেও জল প্রকল্পের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, বাম আমলেই তার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকার অভাবে এই প্রকল্পের কাজ আটকে যায়। পরবর্তী কালে কেন্দ্রের ‘অটল মিশন ফর রিজুভিনেশন অ্যান্ড আর্বান ট্রান্সফর্মেশন’ (আমরুট) প্রকল্প থেকে টাকা চাওয়া হয় পুরসভার এই প্রকল্পের জন্য। কিন্তু সেই অর্থ বরাদ্দ না হওয়ায় ওই প্রকল্প আটকে থাকে। পরে রাজ্য সরকার এই প্রকল্পের জন্য ১২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে।