বিক্ষোভকারীদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেন বিকাশরঞ্জন। তাঁর দাবি, এই বিক্ষোভের পিছনে রাজনৈতিক ইন্ধন আছে। —ফাইল চিত্র।
আইনজীবী তথা সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের বাড়িতে মিছিল করে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করতে গেলেন এসএলএসটি (স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্ট) চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘অযৌক্তিক মামলার কারণে আমাদের নিয়োগপ্রক্রিয়া থমকে যাচ্ছে।’’ এবং ওই মামলার আইনজীবী হিসাবে রয়েছেন বিকাশরঞ্জন। মঙ্গলবার বিকাশের দক্ষিণ কলকাতার বাড়িতে রীতিমতো বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রার্থীরা। শেষে বিক্ষোভকারীদের কয়েক জনকে ডেকে আলাদা করে কথা বলেন বিকাশ। পাশাপাশি পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিন চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে আলোচনার পরে বিকাশরঞ্জন দাবি করেছেন, এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে রাজনৈতিক অভিসন্ধী। তাঁর কথায়, ‘‘এই মামলাগুলি চলছে আদালতের নির্দেশ মেনেই। তার পরে আমার বাড়ির সামনে এই বিক্ষোভের কোনও যুক্তি দেখছি না।’’ আইনজীবীর কথায়, ‘‘বেআইনি নিয়োগের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য পৃথিবীর ইতিহাসে এই প্রথম বার কোনও আইনজীবীর বাড়িতে বিক্ষোভ হল।’’ তিনি এ জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ইন্ধন’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
বিকাশের দাবি, বিক্ষোভকারীদের পরিকল্পনা ছিল তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ করার। যদিও পুলিশ সেটা আটকে দিয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার জন্য নাকি তাঁদের নিয়োগ আটকে যাচ্ছে। আমি তিন জনের সঙ্গে দেখা করেছি। ওঁদের বলেছি, আমার জন্য নয়, বেআইনি নিয়োগের কারণেই নিয়োগপ্রক্রিয়া থমকে যাচ্ছে। এর পিছনে মমতা, অভিষেকের ইন্ধন রয়েছে।’’ বিকাশের সংযুক্তি, ‘‘নিয়োগ মামলা নিয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে। তাই আন্দোলনকারীদের কিছু বলার থাকলে তাঁরাও সুপ্রিম কোর্টে যান।’’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে একাধিক মামলায় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন। এর মধ্যে উচ্চ প্রাথমিকে শারীরশিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ে ‘বেআইনি ভাবে’ যাঁরা চাকরির পাওয়ার অভিযোগে একটি মামলা হয়। তার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, কারও চাকরি যাবে না। বরং অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে আরও নিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়েও একটি মামলা দায়ের হয়েছে আদালতে। তাঁর আইনজীবী হিসাবে লড়ছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন।
উল্লেখ্য, এই বিক্ষোভকারীদের একাংশই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যে, বামপন্থী আইনজীবীরা চাকরিতে বাধা দিলে তাঁরা আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ঘেরাও করবেন।