কর্তব্যরত অবস্থায় পুলিশকে নিগ্রহের ঘটনা থামছে না।
ফের রাতের শহরে প্রতিমা বিসর্জন দিতে বেরোনো এক দল যুবকের সঙ্গে বাজি নিয়ে বচসার জেরে নিগৃহীত হলেন আলিপুর থানার এক এএসআই।
পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার গভীর রাতে কালীপ্রতিমা বিসর্জনের জন্য চেতলা থেকে গঙ্গার ঘাটে যাচ্ছিল একটি দল। আলিপুরের গোপালনগর মোড় পেরিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎই ওই মিছিল থেকে উড়ে আসা বাজির ফুলকি আলিপুর থানার কর্তব্যরত এএসআই পি এল পোদ্দারের গায়ে লাগে। এর পরেই ওই এএসআই-সহ ঘটনাস্থলে থাকা সব পুলিশ প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, প্রতিবাদ করায় উল্টে কয়েক জন যুবক পি এল পোদ্দারের সঙ্গে কথা কাটাকাটি জুড়ে দেন। এমনকী তাঁর গায়েও হাত দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার পরে আলিপুর থানার তরফে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ ধরা পড়েনি।
প্রথম দফায় দায়িত্ব নেওয়ার পর উর্দির সম্মান ফেরানোর ডাক দিয়েছিলেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। অভিযুক্তদের জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করলেও পুলিশ নিগ্রহের ঘটনা থেমে নেই, রবিবার রাতের ঘটনা তারই প্রমাণ। কখনও রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে মত্ত চালকের হাতে নিগৃহীত হওয়ার ঘটনা, কখনও জাদুঘরের সামনে প্রস্রাব করতে বাধা দেওয়ায় মত্ত অবস্থায় পুলিশকর্মীকে মারধর, আবার কখনও বা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গিয়ে পুলিশের গায়ে হাত দেওয়া— পুলিশকে নিগ্রহের ঘটনা চলছেই।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পার্ক স্ট্রিটের কলিন লেনে মত্ত যুবকের হাতে প্রহৃত হন পার্ক স্ট্রিট থানার এক এএসআই ও কনস্টেবল। ফের শনিবার সন্ধ্যায় বালিগঞ্জ ফাঁড়ির কাছে হেলমেটহীন মোটরবাইক চালককে থামাতে গিয়ে প্রহৃত হন দক্ষিণ-পূর্ব সাউথ ইস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট। বালিগঞ্জ ফাঁড়ির সামনের ঘটনায় সাত জন গ্রেফতার হলেও পরের দিন তারা জামিন পেয়ে যান। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়ায় পুলিশের নমনীয় মনোভাবকেই দায়ী করছেন অনেকে। বিশেষত রবিবার রাতে পুলিশ নিগ্রহের ঘটনার পরেও অভিযুক্তদের সোমবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কেন গ্রেফতার করতে পারল না, তা নিয়ে পুলিশেরই একাংশ সরব হয়েছেন। প্রাক্তন এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘পুলিশকে কঠোর হতে হবে। তবেই উর্দির সম্মান রক্ষা পাবে।’’