(উপরে) মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়িতে ভাঙচুর। (নীচে) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বামপন্থী পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রভোটের দাবিতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে ‘আক্রান্ত’ হয়েছেন তাদের সদস্যেরা, এমন অভিযোগই তুলল বামপন্থীদের ছাত্র সংগঠন এসএফআই। প্রতিবাদে শনিবার সন্ধ্যায় ৮বি মোড়ে অবরোধে বসেন ওই সংগঠনের সদস্যেরা। আগামী সোমবার রাজ্যের সব কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘটের ডাকও দেন তাঁরা। পাল্টা যাদবপুরের সুকান্ত সেতু থেকে শনিবার সন্ধ্যায় প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। মিছিলে রয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, যাদবপুরের সাংসদ সায়নী ঘোষ, তৃণমূলের কাউন্সিলর অরূপ চক্রবর্তী-সহ দলের নেতা-কর্মীরা।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শনিবার সন্ধ্যায় যাদবপুরের রাস্তায় নামানো হয়েছে র্যাফ। এই আবহে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন জুটার তরফে বিবৃতি দিয়ে রাজ্যের শাসকদলের সমালোচনা করা হয়েছে। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, মন্ত্রীর উপস্থিতিতেই ‘একদল গুন্ডা’ পড়ুয়াদের উপর হামলা চালায়। এক ছাত্রের উপর দিয়ে মন্ত্রীর গাড়ি চালিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন সংগঠনের সদস্যেরা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে ‘ইতিবাচক পদক্ষেপ’ করার আবেদনও জানিয়েছেন তাঁরা।
তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার সম্মেলন ঘিরে শনিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড বাধে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপেন এয়ার থিয়েটার (ওএটি)-এ ছিল ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলন। তার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রভোটের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান বাম, অতি বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ফটক আটকে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। ভোটের দাবিতে পোস্টারও টাঙানো হয়। তাঁদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। শেষ পর্যন্ত তিন নম্বর গেট দিয়ে তিনি প্রবেশ করলে তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন পড়ুয়ারা। ‘গোব্যাক’ স্লোগানও দেন তাঁরা। সম্মেলনে এই নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ব্রাত্য। তিনি ওএটি থেকে বার হতেই তাঁর গাড়ির টায়ার পাংচার করে দেন বিক্ষোভকারীরা। অভিযোগ, ব্রাত্যকে নিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর গাড়িতে ধাক্কা লাগে এক পড়ুয়ার। তিনি আহত হন। ব্রাত্যের গাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ। ভেঙে দেওয়া হয় গাড়ির ‘লুকিং গ্লাস’।
ব্রাত্য জানিয়েছেন, গাড়িতে ইট ছোড়া এবং হেনস্থার জেরে তিনি আহত হয়েছেন। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
অন্য দিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার সদস্যদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় এসএফআই, আইসা, ডিএসএফের সদস্যদের। অভিযোগ, যাদবপুরের অধ্যাপক তথা ওয়েবকুপার সদস্য ওমপ্রকাশ মিশ্রকে লাঠি হাতে তাড়া করেন বাম এবং অতি বাম সংগঠনের কয়েক জন পড়ুয়া। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে সরিয়ে নিয়ে যান। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ধস্তাধস্তির মধ্যে এক পড়ুয়ার মাথা ফেটেছে। আহত হয়েছেন দুই অধ্যাপক। এক মহিলা অধ্যাপকের শাড়ি ছেঁড়ার অভিযোগও উঠেছে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে।