ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অভিভাবকরা। নিজস্ব চিত্র।
এটাই প্রথম নয়। তিন বছর আগেও একই অভিযোগ উঠেছিল। তখনও পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা থিতিয়ে পড়ে।
আর এখানেই প্রশ্নটা তুলছেন অভিভাবকরা। যেখানে পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থাই নেই, সেখানে ছেলেমেয়েদের পাঠাবেন কোন ভরসায়? অথচ কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা খরচ করে নামী স্কুলে তাদের পড়তে পাঠাচ্ছেন তাঁরা। আর শিক্ষাঙ্গনেই যদি এমন ভয়ানক কাণ্ড ঘটে, তা হলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যত্ কী?
অভিযোগের আঙুল আবারও সেই জি ডি বিড়লা স্কুলের দিকে। শারীর শিক্ষার দুই শিক্ষকের হাতে এ বার আক্রান্ত চার বছরের ছাত্রী! শনিবার এমন অভিযোগ ওঠার পর থেকেই রাজ্য জুড়ে ধিক্কারের বন্যা বয়ে গিয়েছে। খোদ শিক্ষামন্ত্রীও ঘটনার নিন্দা করেছেন। এ দিন সকালে ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রানিকুঠির ওই স্কুল। অভিভাবকরা আবারও স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। আগের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েও কেন স্কুলে সিসিটিভি বসানো হল না, উঠেছে প্রশ্ন। এখানেই শেষ নয়! তাঁরা আরও আশ্চর্য, এত কিছুর পরেও স্কুল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে ‘গুজব’, ‘রং চড়িয়ে বলা হচ্ছে’ বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করল!
আরও পড়ুন: চার বছরের ছাত্রীকে দু’জন শিক্ষক মিলে যৌন হেনস্থা!
বেলা যত গড়িয়েছে দুই শিক্ষকের শাস্তির দাবি তুলে বিক্ষোভ আরও তুঙ্গে উঠেছে। পুলিশ এসেও সামাল দিতে পারেনি। এরই মধ্যে এসএসকেএম হাসপাতালে ছাত্রীটির মেডিক্যাল টেস্ট হয়। টেস্টের রিপোর্টেও যৌন নির্যাতনের বিষয়টি উঠে আসে। পাশাপাশি, পুলিশের দেখানো ওই স্কুলের পাঁচ শিক্ষকের ছবির মধ্যে শিশুটি দু’জনকে চিহ্নিত করেছে। তাতে পুলিশ বিষয়টি নিয়ে আরও নিশ্চিত হয়েছে বলে সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন: এই বিকৃতি একটা বড় মানসিক ব্যাধি, বলছেন মনোবিদরা
প্রথম দিকে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু রিপোর্টে যখন যৌন নির্যাতনের বিষয়টি স্পষ্ট হয়, স্কুলের অধ্যক্ষা বিষয়টি কার্যত মেনে নেন। তিনি জানান, এমন একটা ঘটনা ঘটেছে স্কুলে। স্কুলে সিসিটিভি মেই কেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “স্কুলে সিসিটিভি লাগানোর চিন্তা ভাবনা চলছিল। এখনও কার্যকর হয়নি।” কলকাতা শিশু কল্যাণ সমিতির তরফে ইন্দ্রাণী ব্রহ্ম এ দিন স্কুলে আসেন। তিনি পরে বলেন, “সরকারের কাছে প্রস্তাব রাখব, সব স্কুলে যেন সিসিটিভি বসানো হয়।”
কিন্তু স্কুলে পড়ুয়াদের রক্ষকই যদি তাদের সঙ্গে এমন ভয়ঙ্কর আচরণ করেন, তবে কোন ভরসায় ছেলেমেয়েদের সেখানে পাঠাবেন অভিভাবকরা? দিনের শেষে এই প্রশ্নেই উত্তাল গোটা রাজ্য।