সিবিএসই এবং সিআইএসসিই, দুই বোর্ডেরই দশম ও দ্বাদশের ফল বেরিয়েছে সম্প্রতি। ফাইল ছবি।
সিবিএসই এবং সিআইএসসিই, দুই বোর্ডেরই দশম ও দ্বাদশের ফল বেরিয়েছে সম্প্রতি। এ বার সিবিএসই-র দশমের পাশের হার ৯৩.১২ শতাংশ। সিআইএসসিই বোর্ডের আইসিএসই বা দশমের পাশের হার ৯৮.৯৪ শতাংশ। একই ভাবে সিবিএসই-র দ্বাদশের পাশের হার ৮৭.৩৩ শতাংশ। অন্য দিকে আইএসসি-র পাশের হার ৯৬.৯৩ শতাংশ। পাশের হারে কি তা হলে সিবিএসই পিছিয়ে পড়ছে? শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, দুই বোর্ডের তুলনা করা ঠিক নয়। তবে, এ বার সিবিএসই-র পাশের হার অন্য বারের থেকে কিছুটা হলেও খারাপ।
সিবিএসই অনুমোদিত জি ডি গোয়েন্কা পাবলিক স্কুল, দক্ষিণেশ্বরের অধ্যক্ষা সুজাতা চট্টোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘সিবিএসই-র ফল আগের তুলনায় কিছুটা খারাপ। তবে, মনে রাখতে হবে, সিবিএসই-র প্রশ্নের ধরন পাল্টাচ্ছে। পরীক্ষার্থী কত তথ্য জানে, তা দেখা হচ্ছে না। বরং পরীক্ষার্থীর বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা দেখা হচ্ছে। তার প্রভাব কিছুটা পড়তে পারে পাশের হারে। ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রশ্ন বাড়বে।’’ শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, তিন ধরনের প্রশ্নে বোর্ডের পরীক্ষায় জোর দিচ্ছে সিবিএসই। মাল্টিপল চয়েস কোয়েশ্চেন বা এমসিকিউ, কেস বেসড কোয়েশ্চেন বা সিবিকিউ এবং কোনও একটি বিবৃতি দিয়ে সেই বিবৃতির কারণ দিয়ে জানতে চাওয়া হচ্ছে, তা ঠিক না ভুল। অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যায় প্রয়োগমূলক প্রশ্ন বেশি থাকছে। শ্রীশিক্ষায়তন স্কুলের মহাসচিব ব্রততী ভট্টাচার্যের মতে, ‘‘দেশ জুড়ে সিবিএসই বোর্ডের স্কুলের সংখ্যা সিআইএসসিই বোর্ডের স্কুলের থেকে অনেক বেশি। ফলে পাশের হার কিছুটা কমতে পারে। সিবিএসই-র দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম অনেকটাই সহজ। কিন্তু একাদশ, দ্বাদশে অনেকটা আলাদা। ফলে অনেকে দ্বাদশে গিয়ে ধাক্কা খায়। তাতেও পাশের হার কমতে পারে।’’
সিআইএসসিই বোর্ড অনুমোদিত ন্যাশনাল ইংলিশ স্কুলের অধ্যক্ষা মৌসুমী সাহার মতে, ‘‘অফলাইন ক্লাসের পাশাপাশি প্রয়োজনে অনলাইন ও বিশেষ ক্লাস নেওয়া হয়েছে সারা বছর। আমাদের বোর্ডের প্রশ্নের ধরনও কিছুটা পাল্টেছে, কিন্তু সেটা পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দেওয়ারও যথেষ্ট সময় পাওয়া গিয়েছে। ফলে পাশের হার পাল্টায়নি।’’ রামমোহন মিশন হাইস্কুলের অধ্যক্ষ সুজয় বিশ্বাসের মতে, ‘‘বোর্ড থেকে পরিবর্তিত সিলেবাস ও প্রশ্ন কেমন হবে, তার নির্দেশিকা অনেক আগে পাওয়ায় পরীক্ষার্থীদের বোঝাতে অসুবিধা হয়নি। দ্বাদশের পড়ুয়ারা করোনার জন্য ২০২১ সালে দশমের বোর্ডের পরীক্ষা দেয়নি। এ বারই জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা দিলেও বিশেষ ক্লাস বেশি হওয়ায় পাশের হার একই রাখতে পেরেছে।’’ তবে দুই বোর্ডের অধ্যক্ষেরাই জানান, আগামী বারও নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির অনুসরণে প্রশ্ন বেশি থাকবে। সেই ভাবেই প্রস্তুতি নিতে হবে।