ফাইল চিত্র।
সিঁথি থানায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আসুরা বিবির অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতের ছেলের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্ত করার ছাড়পত্র দিল আদালত। শুক্রবার ঘটনার গুরুত্ব বুঝে শিয়ালদহ আদালতের বিচারক শুভদীপ রায় এই ছাড়পত্র দিয়েছেন বলে জানান সরকারি আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী। পুলিশ এ বার মৃতের ছেলে বিজয় সাউয়ের বিরুদ্ধে ৫০৬ (২) ধারায় অপরাধমূলক হুমকির অভিযোগে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করতে পারে বলে জানান অরূপবাবু। কলকাতা পুলিশের তরফে অবশ্য এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে চাওয়া হয়নি।
গত সোমবার সিঁথি থানায় পুলিশের হেফাজতে থাকা রাজকুমার সাউ নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। জানা যায়, একটি চুরির ঘটনায় আসুরা বিবি নামে এক মহিলাকে ধরেছিল পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, চুরির সামগ্রী রাজকুমারের কাছে বিক্রি করা হয়েছিল। রাজকুমারকে থানায় ‘তুলে এনে’ জেরার সময়েই তাঁর মৃত্যু হয় বলে মৃতের পরিবারের অভিযোগ। ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী আসুরা প্রথমে প্রকাশ্যেই দাবি করেন, তাঁর সামনে রাজকুমারকে ধরে পুলিশ মারধর করেছে। এর পরেই নিখোঁজ হয়ে যান আসুরা।
বুধবার রাতে হঠাৎ টালা থানায় গিয়ে বিজয়ের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর করে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন আসুরা। আইনজীবী অরূপবাবু বলেন, ‘‘১১ ফেব্রুয়ারি আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে গিয়েছিলেন আসুরা। সেখানে বিজয় তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে এই অভিযোগটিকে ‘কগনিজেবল’ বা ধর্তব্যে আনার মতো অভিযোগ ধরে এফআইআর রুজু করতে দেওয়ার আবেদন করেছিলাম আমরা। বিচারক এফআইআর করার ছাড়পত্র দিয়েছেন।’’
অরূপবাবু এ-ও বলেন, ‘‘আসুরা যে অভিযোগ করেছিলেন, তা ‘নন-কগনিজেবল অফেন্স’। কিন্তু ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৫ ধারায় বলা আছে, আদালত মনে করলে কোনও নন-কগনিজেবল অপরাধকে কগনিজেবল ধরে নিয়ে তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারে। আমরা এ দিন সেই আবেদনই জানিয়েছিলাম। কারণ, সিঁথির ঘটনায় আসুরা নামের ওই মহিলার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’’ মৃতের ছেলে বিজয় অবশ্য এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘আগেও বলেছি, আবারও বলছি, পুলিশ আসুরা বিবির বয়ান বদল করিয়েছে। জোর করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করিয়েছে। কিন্তু বিচার ব্যবস্থার উপরে আমাদের আস্থা রয়েছে। আমার বাবার খুনিদের শাস্তি চাই।’’