বিশ্বরেকর্ডধারী পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্ত। —ফাইল চিত্র।
বিমানচালকের লাইসেন্স হঠাৎই বাতিল হয়ে যাওয়া। সঙ্গে দোসর খারাপ আবহাওয়া। এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়ে শুরু হওয়ার আগেই বন্ধ হয়ে গেল বিশ্বরেকর্ডধারী পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্তের উত্তর মেরু অভিযান। শুক্রবার বিকেলেই এই ঘোষণা করে সত্যরূপের এজেন্সি, যাদের সাহায্যে অভিযান করতে যাচ্ছিলেন ওই বাঙালি অভিযাত্রী ও তাঁর সঙ্গীরা।
নরওয়ের লংইয়ারবেন শহর থেকে বিশেষ বিমানে বার্নিয়ো আইস ক্যাম্প (রাশিয়ার অংশ) হয়ে সুমেরুর পথে রওনা হওয়ার কথা ছিল সত্যরূপদের। এ বারের অভিযানে ওই বিমান চালানোর কথা ছিল ইউক্রেনের দুই বিমানচালকের। কিন্তু গত ২ এপ্রিল লংইয়ারবেন পৌঁছনোর কয়েক দিন পরে অভিযাত্রী দল জানতে পারে, হঠাৎই ওই বিমানচালকদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে! এ ছাড়াও ৮০ ডিগ্রি অক্ষাংশের উপরে ওই ধরনের বিমান ওড়ার উপরেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইউক্রেন। ফলে প্রাথমিক ভাবে কয়েক দিনের জন্য আটকে যায় অভিযান।
কয়েক দফা আলোচনার পরে এর পরে কানাডা থেকে অন্য একটি ছোট বাসলার বিমান আনিয়ে অভিযান শুরুর চেষ্টা হয়। কিন্তু এ দিন বিকেলে জানা যায়, খারাপ আবহাওয়ার কারণে বার্নিয়োর বরফের উপরে তৈরি রানওয়েতে নামার চেষ্টা করলে ওই বিমান ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ফলে এ বছরের মতো অভিযান বাতিল করা হচ্ছে বলে এজেন্সির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় সত্যরূপদের।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
সপ্তশৃঙ্গ ও সপ্ত আগ্নেয়গিরিজয়ী সত্যরূপ ‘এক্সপ্লোরার্স গ্র্যান্ড স্ল্যাম’ (সপ্তশৃঙ্গ ও দুই মেরু) খেতাব জয়ের লক্ষ্যে গত ৩১ মার্চ কলকাতা থেকে নরওয়েগামী বিমানে উঠেছিলেন তিনি। লক্ষ্য ছিল ৮৯ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে ‘লাস্ট ডিগ্রি স্কি’ (১১১ কিলোমিটার পথ) করে সুমেরু পৌঁছনো। কিন্তু শুরুতেই বিমান-বিভ্রাটে অসলো শহর পৌঁছতে নাজেহাল হন সত্যরূপ। লংইয়ারবেন পৌঁছনোর পর থেকেই অভিযান নিয়ে অনিশ্চয়তা চলছিল। গত কয়েক দিন নরওয়ের ওই প্রত্যন্ত শহরে অপেক্ষা করছিলেন সত্যরূপের মতো বিভিন্ন দেশের ৯০ জন অভিযাত্রী, ৫০ জন ম্যারাথন যাত্রী এবং হেলিকপ্টার পর্যটকেরা। লংইয়ারবেন থেকে সত্যরূপ বলে, ‘‘দেরি করে ঘুম থেকে উঠে দেখি, অভিযান নিয়ে প্রচুর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ এসেছে। প্রথমে মনে হল, এখনই বেরোতে হবে। তার পরে হঠাৎই ওরা জানিয়ে দিল, যাত্রা বাতিল।’’
বিশ্ব উষ্ণায়নের জেরে সুমেরুর বরফ পাতলা হয়ে যাওয়ায় কানাডার দিক থেকে সুমেরু অভিযান ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নরওয়ে দিক দিয়ে আর কত বছর সুমেরু পৌঁছতে পারবেন অভিযাত্রীরা, তা নিয়েও এখন প্রশ্ন উঠছে। আগামী বছর যদি এই অভিযান হয়, সে ক্ষেত্রেও এর খরচের একটা বড় অংশ ফের দিতে হবে এই অভিযাত্রীদের। তবে আশাবাদী পর্বতারোহী বলছেন, ‘‘অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস এ রকমই। কখন কী হয়, কিছুই বলা যায় না।’’