এমনই অবস্থা বাসস্ট্যান্ডের। ছবি: অরুণ লোধ
যথেষ্ট সংখ্যক বাস নেই। রাস্তায় পিচ নেই। আলো নেই। শৌচাগারও কার্যত নেই। প্রতীক্ষার জন্য ছাউনির ব্যবস্থা নেই। এই ‘নেই’ রাজ্যের নাম সরশুনা পুরনো বাসস্ট্যান্ড। এই বাসস্ট্যান্ড চত্বর থেকে সিএসটিসি-র বাস ছাড়ে।
কয়েক বছর আগেও ৭, ৭এ, এস২২, ৩এ/২ রুটের প্রায় ১৮টি বাস সরশুনা বাসস্ট্যান্ড থেকে ছাড়ত। এখন মেরেকেটে আটটি বাস চলে বলে জানালেন এক কর্মী। শুধু ৭এ রুটের সরশুনা-হাওড়া এবং সরশুনা-নবান্ন যাওয়ার বাসই চলে এখন। ৩এ/২ রুটের সরশুনা-লাবণি চলে কালেভদ্রে। এই পরিষেবায় নাজেহাল অবস্থা যাত্রীদের।
অপর্যাপ্ত বাসের পাশাপাশি বাসস্ট্যান্ডের বেহাল পরিষেবা নিয়েও বিস্তর অভিযোগ রয়েছে যাত্রী এবং কর্মীদের। সরশুনার বাসিন্দা লাল্টু বিশ্বাস বলেন, “বাসের কোনও নির্দিষ্ট সময়ই নেই। অনেকক্ষণ পরপর বাস মেলে। কোনও বসার ব্যবস্থা নেই। অসুস্থ এবং বয়স্ক যাত্রীদের খুবই সমস্যা হয়। ক’বছর আগেও এত খারাপ পরিস্থিতি ছিল না।” এক কর্মী জানাচ্ছেন, কয়েক বছর আগে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিধায়ক তহবিলের টাকায় একটি বাসছাউনি হয়েছে। স্ট্যান্ডে এখন সে ভাবে ভিড় হয় না। ফলে ওতেই কাজ চলে যায়। তবে সেখানে কোনও বসার জায়গা নেই। অন্য এক যাত্রীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার সিএসটিসি-র এত নতুন বাস নামাচ্ছে। অথচ এই স্ট্যান্ডের বাসগুলি একবারে লরঝরে।
দীর্ঘ দিন চত্বরে কোনও আলোর ব্যবস্থা নেই। অফিস ঘর থেকে আসা অল্প আলোই ভরসা। অনেক সময় টর্চ বা মোবাইলের আলো জ্বেলে পথ চলতে হয়। ততোধিক খারাপ বাসস্ট্যান্ড চত্বরের রাস্তা। পিচ উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। হেলেদুলে বাস চলে। বৃষ্টির দিনে সমস্যা ভয়াবহ। ঢোকার মুখে বিশাল গর্তে জল জমে রীতিমতো ডোবার চেহারা নেয়। দু’দিকের সংকীর্ণ রাস্তা ধরে যাত্রীদের যাতায়াত করতে হয়।
অফিসঘরের অবস্থাও তথৈবচ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসচালক জানান, বৃষ্টি হলে ঘরের মধ্যে ছাতা খুলে বসতে হয়। ছাদ আর দেওয়ালের চার দিকে ফাটল ধরেছে। যে কোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়ার আতঙ্ক রয়েছে। একটি শৌচাগার তৈরি হয়ে প্রথম থেকেই বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। মহিলাযাত্রীদের খুবই অসুবিধা হয়। ফলে ক্রমেই যাত্রীসংখ্যা কমছে বলে জানালেন কর্মীরা।
এলাকাটি ১২৭ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। কাউন্সিলর শ্যামাদাস রায় বলেন, “পরিষেবাগত যাবতীয় সমস্যা নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানান হয়েছে।
জলের লাইন এবং ট্যাঙ্ক না থাকায় শৌচালয় চালু করা যায়নি। এই নিয়ে পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের জানিয়েছি।” তবে বাস পরিষেবার বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।” পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “ইতিমধ্যেই বেশ কিছু বাসস্ট্যান্ড ঢেলে সাজার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সরশুনা পুরনো বাসস্ট্যান্ড বিষয়েও যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। এখানে নতুন বাস নামানোর বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”