প্রতীকী ছবি।
পুলিশের চোখে ধুলো দিতেই পুজোর প্রায় দু’মাস আগে থেকে শহরে নিষিদ্ধ শব্দবাজির কারবার শুরু করেছেন বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশ। সোমবার পোস্তা থেকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি উদ্ধার এবং বাজেয়াপ্ত করার পরে তদন্ত নেমে এই তথ্য জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে এবং পরে, বিশেষ করে কালীপুজোর আগে শহর জুড়ে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ধরতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। তাতে প্রতি বছরই প্রচুর পরিমাণে শব্দবাজি আটক এবং বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। লুকিয়ে-চুরিয়ে কিছু শব্দবাজি বাজারে বিক্রি হলেও নজরদারি এবং ধরপাকড়ের জেরে গত কয়েক বছর ধরে নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবসা তুলনামূলক ভাবে মার খেয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তাই এ বার পুজোর দু’-আড়াই মাস আগে থেকেই শহরে ওই বাজির ব্যবসা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে লালবাজারের দাবি।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার বিকেলে জোড়াবাগান থানার অফিসারদের কাছে খবর আসে, পোস্তার গণপত বাগলা রোডে নিষিদ্ধ শব্দবাজির ব্যবসা চলছে। তদন্তকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, একটি পরিবহণ সংস্থার অফিস রয়েছে সেখানে। অফিসের সামনে রাখা ছিল প্রচুর বাক্স। সেগুলি খুলতেই বেরিয়ে আসে নিষিদ্ধ শব্দবাজির প্যাকেট। পুলিশের দাবি, প্রায় ৬০০ কেজি বাজি হাওড়ার বাগনান থেকে ছোট মালবাহী গাড়িতে চাপিয়ে পোস্তায় নিয়ে এসেছিলেন এক ব্যক্তি। ঝাড়খণ্ডের পাথুরিয়াঘাটে পাঠানোর জন্য ওই পরিবহণ সংস্থা থেকে গাড়ি ভাড়া করা হয়েছিল। কিন্তু ওই বাজি পাচার হওয়ার আগেই তা ধরে ফেলে পুলিশ। প্রেমশঙ্কর মিশ্র নামে ওই পরিবহণ সংস্থার এক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের জেরার মুখে ধৃত জানান, পুজোর সময়ে পুলিশি ধড়পাকড়ের জেরে ব্যবসা মার খায়। তাই এ বার আগে থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজি পাচার করা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, বড়বাজার ও পোস্তা এলাকার বিভিন্ন পরিবহণ সংস্থায় যে চালান জমা দিত বাজি পাচারকারীরা, তাতে শুধু মাত্র ‘বাজি’ লেখা থাকত। রাস্তায় কোথাও তল্লাশি করা হলে ওই চালান দেখিয়ে সহজেই পার পেয়ে যেত বাজির পাচারকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবারের ঘটনায় একটি জিএসটি চালান উদ্ধার করা হয়েছে। তা সঠিক কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই চালান থেকে বাগনানের একটি বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থার নাম জানতে পেরেছে পুলিশ। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, বড়বাজার বা পোস্তা ছাড়াও ভিন্ রাজ্যের বা দূরপাল্লার বাসে করে ওই একই ভাবে নিষিদ্ধ শব্দবাজি পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। সেই খবর কিছু দিন আগে জানতে পেরেই নজরদারি চালানো হচ্ছিল বলে জানান ওই অফিসার।