আক্রান্ত বান্টি চৌধুরীর বাড়িতে রূপা। রয়েছেন এলাকার বিজেপি প্রার্থী জয় চৌধুরী। রবিবার, বেহালায়। —নিজস্ব চিত্র।
কলকাতার ভোটার তালিকায় নাম না থাকায় প্রার্থী হতে না পারার সময়েই বলেছিলেন, প্রচারে পূর্ণ উদ্যমে অংশ নেবেন। সেই মতোই রবিবার বেহালায় বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারে বেরোলেন রূপা গঙ্গোপাধ্যায়।
গত বৃহস্পতিবার বেহালার শীলপাড়ায় কলকাতা পুরসভার ১২৫ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থী জয় চৌধুরীর সমর্থনে পতাকা-ফেস্টুন লাগাতে গিয়ে তৃণমূলের হাতে আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগ করেছিলেন বিজেপি কর্মী। তাঁদের অভিযোগ ছিল, মারে জখম হয়ে বান্টি চৌধুরী নামে এক কর্মী হাসপাতালে ভর্তি হন। পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। এ দিন সন্ধ্যায় শীলপাড়ায় ওই ওয়ার্ডেই প্রচারে যান রূপা। তখনই বান্টির বাড়িতে গেলে ওই বিজেপি কর্মীর বাবা খোকন চৌধুরী এবং প্রতিবেশীরা ঘটনার বিবরণ দেওয়ার পাশাপাশি আঘাতের চিহ্ন দেখিয়ে নিরাপত্তার দাবি তোলেন।
রূপা তখন জয় এবং স্থানীয় কর্মীদের বলেন, “আপনারা আমাকে আক্রান্তদের নাম, ঠিকানা, বয়স এবং নমিনির নাম লিখে তালিকা দিন। আমি তাঁদের স্বাস্থ্য বিমা করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করব।” সেই আশ্বাসে অবশ্য আশ্বস্ত হননি কিছু বিজেপি কর্মী। তাঁদের প্রশ্ন ছিল, “মার খাওয়ার পর বিমা দিয়ে লাভ কী? আমরা নিরাপত্তা চাই।” পরে রূপা বলেন, “ওঁরা যে প্রশ্ন তুলছিলেন, তার উত্তর তো আমার কাছে নেই! সে উত্তর তো আছে সরকারের কাছে। কেন পুলিশ অভিযোগ পেয়েও নিষ্ক্রিয় থাকে, কেন উনি এমন একটা দল গঠন করেছেন, যারা বিরোধীদের আক্রমণ করে, তার জবাব তো মমতাদিকে দিতে হবে!”
দলীয় কর্মীদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলার সময়েই সামনে দিয়ে একটি তৃণমূলের মিছিল যাচ্ছিল। অভিযোগ, মিছিলকারীরা রূপার সামনে দাঁড়িয়ে স্লোগান দেন। বিরক্ত রূপা সেই মিছিলের দিকে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন। অশান্তির আশঙ্কায় বিজেপি-র স্থানীয় নেতা-কর্মীরাই তাঁকে বাধা দেন। তবে ফেরার পথে পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এলাকায় শান্তি রক্ষার আবেদন জানান রূপা। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছেও তাঁর আবেদন ছিল “আপনারা নিজেদের ছেলেদের বুঝিয়ে বলুন, কেউ যেন বিরোধী পক্ষের গায়ে হাত না তোলে। আমরা মারামারি চাই না। শান্তিতে ভোট হোক।”
তৃণমূল বিরোধীদের আক্রমণ করছে, রূপার এই অভিযোগকে একেবারেই আমল দিতে নারাজ মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রূপা যে সব অভিযোগ করছেন, তেমন কিছু জানা নেই। বিরোধীদের আঘাত করা বা বাধা দেওয়া তৃণমূলের সংস্কৃতির বিরোধী। আমরা সব সময়েই চাই শান্তিতে ভোট হোক। আসলে রূপা অভিনেত্রী। তিনি বেহালার ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অভিনয় করছেন। বাস্তবের সঙ্গে অভিনয়ের মিল থাকে না।”