এসএসকেএমের ট্রমা সেন্টার। —ফাইল চিত্র।
এসএসকেএম হাসপাতালে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের অভিযোগ। হকি স্টিক, উইকেট নিয়ে হাসপাতালে ঢুকে গুন্ডামি করার অভিযোগ উঠেছে। মারধর করা হয় রোগীর আত্মীয়দের। এ নিয়ে চাঞ্চল্য হাসপাতাল চত্বরে। আবারও হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠল। আতঙ্কে রোগী, রোগীর পরিজন এবং চিকিৎসকেরা। ঘটনাস্থলে গিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রবিবার সকাল ৮টার পর এসএসকেএমে বাইক নিয়ে ঢুকে পড়েন কয়েক জন। অভিযোগ, তাঁদের হাতে ছিল হকি স্টিক এবং উইকেট। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয়কে বেধড়ক মারধর করা হয়। একাধিক জুনিয়র ডাক্তারের অভিযোগ, ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। কিন্তু তারা গন্ডগোল দেখেও না দেখার ভান করেছে। এক জুনিয়র চিকিৎসকের কথায়, ‘‘এই তো ৯০ শতাংশ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিক হয়ে যাওয়ার নমুনা! কলকাতার বুকে বড় সরকারি হাসপাতালে সকাল সকাল দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়ে আবার বেরিয়েও গেল। কেউ কিছু করতে পারল না।’’
প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান অনুযায়ী, রবিবার সকালে ১০-১৫ জনের একটি দল বাইক নিয়ে হাসপাতালে ঢোকে। যুবকদের হাতে ছিল উইকেট এবং হকি স্টিক। তাঁরা ট্রমা কেয়ার সেন্টারের দিকে এগিয়ে যান। সেখানে এক জনকে মারধর করে তাণ্ডব চালিয়ে বেরিয়ে যান। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুই পক্ষের গন্ডগোল থেকেই এই তাণ্ডবের ঘটনা ঘটেছে। ট্রমা কেয়ার সেন্টারে বাঁকুড়া থেকে আসা এক রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রবিবারই তাঁর হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কথা। জানা যাচ্ছে, তাঁর ছেলে সৌরভ মোদক ট্রমা কেয়ার সেন্টারের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁকেই বেধড়ক মারধর করা হয়। মাথা ফাটে ওই যুবকের। তাঁকে মারধর করে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান ওই যুবকেরা। তাঁদের পরিচয় কী, কী নিয়ে এই গন্ডগোল, এখনও সে সব পরিষ্কার নয়। তবে রাজ্যের বৃহত্তম সরকারি হাসপাতালে এমন ঘটনায় রোগী এবং চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠল।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে ১০ দফা দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন চিকিৎসকেরা। ‘আমরণ অনশন’-এ বসেছেন কয়েক জন জুনিয়র ডাক্তার। তাঁদের অন্যতম দাবি, হাসপাতালের সুরক্ষা এবং চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা। অন্য দিকে, সরকারের তরফে দিন কয়েক আগেই জানানো হয়েছিল সরকারি হাসপাতালগুলি নিরাপত্তার ব্যবস্থা জোরদার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সিসি ক্যামেরা বসানো, নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েনের মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে। রবিবারের ঘটনার প্রেক্ষিতে এসএসকেএমের এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘এই তো নিরাপত্তার বহর! দেখুন, এক দল লোক ঢুকে মারধর করে বেরিয়ে গেল। কারও কিছু করার থাকল না। পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখল।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, আহত যুবকের আপাতত চিকিৎসা চলছে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে। মাথায় সেলাই করা হবে তাঁর। আঘাত কতটা গুরুতর, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। ভিতরে কোথাও রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। সিটি স্ক্যান এবং অন্যান্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। অন্য দিকে, কী নিয়ে এই হামলা, কারা জড়িত, তার খোঁজ নিচ্ছে পুলিশ।