বেপরোয়া বাইক ধরতে বড়বাজারে চলছে বিশেষ পুলিশি অভিযান। ছবি: কলকাতা পুলিশের সৌজন্যে।
পুলিশকে বাইকের সঙ্গে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যাওয়া কড়েয়ার বাইক চালক এখনও পুলিশের নাগালের বাইরে। তাকে পাকড়াও করার আগেই ফের একই ভাবে এক হোমগার্ড এবং ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবলকে জখম করে চম্পট দিল অন্য এক বাইক আরোহী।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার বিকেলে মহাত্মা গাঁধী রোড এবং স্ট্র্যান্ড রোডের সংযোগস্থলে। পুলিশ সূত্রে খবর, বিকেল সওয়া তিনটে নাগাদ ওই মোড়ে কর্তব্যরত ছিলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট সুকান্ত মুহুরি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন কয়েকজন হোমগার্ড এবং কনস্টেবল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি মোটর সাইকেল স্ট্র্যান্ড রোড ধরে আসছিল বাবুঘাটের দিক থেকে। ওই সময়ে স্ট্র্যান্ড রোড মোড়ে লাল সিগন্যাল ছিল। সেই সিগন্যাল উপেক্ষা করে মোটরসাইকেলটি সোজা বেরিয়ে যায়। পুলিশ কর্মীদের অভিযোগ, অত্যন্ত বেপরোয়া ভাবে বাইকটি চালাচ্ছিলেন চালক। সিগন্যাল উপেক্ষা করে যে ভাবে তিনি প্রচণ্ড গতিতে বেরিয়ে যান, তাতে ওই রকম ব্যস্ত মোড়ে বড় সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত।
আরও পড়ুন: বিধায়ক কেনাবেচায় যুক্ত বিজেপি, কর্নাটকে অচলাবস্থা নিয়ে অভিযোগ কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গের
সার্জেন্টের নির্দেশে কর্তব্যরত ট্রাফিক হোমগার্ড ওই বাইকটিকে ধরার চেষ্টা করেন। রাজা আলি নামে ওই হোমগার্ড বাইকটি থামাতে গেলে তাঁকে ধাক্কা মেরে পালানোর চেষ্টা করে বাইকের চালক। তখন রাজাকে সাহায্য করতে এগিয়ে যান ট্রাফিক কনস্টেবল সুভাষ চন্দ্র ঘোষ। কিন্তু থামা দূরঅস্ত্, সুভাষ বাবুকেও একই ভাবে মোটর সাইকেল দিয়ে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায় ওই মোটর সাইকেলের আরোহী।
হাওড়া ব্রিজ ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট সুকান্ত মুহুরি ঘটনাটি সঙ্গে সঙ্গে অফিসার ইন চার্জকে জানান। খবর দেওয়া হয় ট্রাফিক কন্ট্রোল রুম এবং শীর্ষ কর্তাদের।
এর পরই আহত দুই পুলিশ কর্মী বড়বাজার থানায় ওই বাইক চালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এখানে অবশ্য পুলিশ বাইকের নম্বর লিখতে পেরেছে। বাইকের নম্বরের সূত্র ধরেই পুলিশ মোটরসাইকেলের চালক প্রবেশ যাদবকে চিহ্নিত করেছে। গার্ডেনরিচের হরিমোহন ঘোষ স্ট্রিটের বাসিন্দা ওই বাইকের চালক।
শুক্রবার রাতেও এ রকমই এক বেপরোয়া স্কুটার চালকের ধাক্কায় আহত হন এক পুলিশ কর্মী। তপন সাহা নামে ওই পুলিশ কর্মীকে পার্ক সার্কাস মোড়ে ধাক্কা মারে ওই স্কুটার চালক। তবে অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়।
আরও পড়ুন: মেয়ের আত্মা ঘুরে বেড়াচ্ছে! ‘শাপমুক্তি’-র জন্য ৩ বছরের শিশুকে বলির চেষ্টা শিক্ষক পরিবারের
শুক্রবার এবং শনিবার রাতেও পুলিশের পদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে শহর জুড়ে নাকা চেকিং করা হয় বেপরোয়া বাইক চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। ওই বিশেষ অভিযানে প্রায় হাজার খানেক বেপরোয়া বাইক চালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ৭৪ টি বাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
অভিযানের পাশাপাশি, শহরের কিছু এলাকা চিহ্নিত করে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য প্রচার শুরু করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু তার পরও পুলিশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আইন ভাঙার প্রবণতা রোধ যে করা যাচ্ছে না তা পর পর ঘটনাগুলি থেকে স্পষ্ট। কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা স্বীকার করেন, ‘‘ পুরোপুরি এই প্রবণতা বন্ধ করতে সময় লাগবে। তবে এই অভিযান লাগাতার চালিয়ে যেতে হবে।”
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।