আদালত চত্বরে রোদ্দূর রায়।
ইউটিউবার রোদ্দূর রায়কে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে অশালীন আক্রমণের অভিযোগ ছিল রোদ্দূরের বিরুদ্ধে। তাঁর পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়েছিলেন সরকার পক্ষের আইনজীবী। আদালত তাঁকে আগামী মঙ্গলবার, ১৪ জুন পর্যন্ত পুলিশের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন রোদ্দূরের আইনজীবী।
মুখ্যমন্ত্রীকে নেটমাধ্যমে কুরুচিকর আক্রমণের জন্য রোদ্দূরের বিরুদ্ধে নেটমাধ্যমে ঘৃণা ছড়ানোর অভিযোগও আনা হয়েছে। রোদ্দূরের মন্তব্য পেনড্রাইভে করে আদালতে পেশ করেন সরকারি আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘‘রোদ্দূর যে নোংরা মন্তব্য করেছেন, তা মুখে আনার যোগ্য নয়।’’
বৃহস্পতিবার দুপুরেই রোদ্দূরকে আনা হয়েছিল ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। আদালতের চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) ময়ূখ মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে তাঁর মামলাটি ওঠে। আদালত থেকে পাওয়া খবর, শুনানি চলাকালীন প্রবল হই হট্টগোল হয় এজলাসে, কোর্টরুমের ভিতর বেশ কয়েক বার হাততালিও পড়ে। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী দীপঙ্কর। অন্য দিকে রোদ্দূরকে জামিন দেওয়ার প্রসঙ্গে দীপঙ্করের সঙ্গে তীব্র বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন রোদ্দূরের আইনজীবীরা। ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও ওঠে। তার পরই বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ আদালত জানিয়ে দেয় রোদ্দূরকে পুলিশি হেফাজতে থাকতে হবে।
বুধবার গোয়া থেকে ফেরার পর লালবাজারের লক আপে ছিলেন রোদ্দূর। সেখান থেকে দুপুর আড়াইটে নাগাদ ব্যাঙ্কশাল আদালতে আনা হয় রোদ্দূরকে। আদালতের বাইরে রোদ্দূরের সমর্থনে তার আগেই হাজির হয়েছিল বেশ কিছু সংগঠন। রোদ্দূরকে নিয়ে পুলিশের গাড়ি ঢোকে আদালত চত্বরে। গাড়ি থেকে ইউটিউবার নামাতেই তাঁর নাম ধরে চিৎকার করতে শোনা যায় ভক্ত এবং সমর্থকদের। সেই ডাকে সাড়া দেন রোদ্দূরও। চারপাশে পুলিশের ঘেরাটোপ, তার মধ্যেই নিজের নাম শুনে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নেড়ে কোর্টে ঢুকে যান রোদ্দূর।
প্রসঙ্গত, গায়ক রূপঙ্কর এবং অকালপ্রয়াত কেকে-কে নিয়ে রোদ্দূর সম্প্রতি একটি ফেসবুক লাইভ করেছিলেন। সেখানে তিনি রূপঙ্করের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা এবং অভিষেককে নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। কটূক্তি করেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ-সহ কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন সম্পর্কেও। ওই ফেসবুক লাইভের বক্তব্য নিয়েই তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয় গত শনিবার।
(এই প্রতিবেদনটিতে প্রথম প্রকাশের সময় ভুলবশত দীপঙ্কর কুণ্ডুকে রোদ্দূর রায়ের আইনজীবী বলে লেখা হয়েছিল। দীপঙ্কর সরকার পক্ষের আইনজীবী। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা আমরা আন্তরিক দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী)