আরজি করে হামলায় ধৃত সৌমিক দাস নামে এক যুবক। ছবি: সংগৃহীত।
মিছিলে থেকে আরজি করে ঢুকে ভাঙচুর চালানোর কথা দাবি করলেন ধৃতদের এক জন। শুক্রবার গ্রেফতার হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে ধৃত যুবক দাবি করলেন, ‘‘ইমোশনাল হয়ে ভাঙচুর চালিয়েছি!’’
বুধবার রাতে আরজি করে হামলার ঘটনার পর শাসক শিবিরের একাংশ প্রকাশ্যে দাবি করেছিলেন, ‘রাত দখলের’ কর্মসূচির মিছিল থেকেই কয়েক জন হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়েছেন। যদিও বিভিন্ন মহল থেকেই সে কথা অস্বীকার করা হয়েছে। এ বার কার্যত শাসক শিবিরের অভিযোগে সিলমোহর দিয়েই সৌমিক দাস নামে এক ধৃত দাবি করলেন, বুধবার রাতে আরজি কর হাসপাতালের সামনে দিয়ে যে মিছিল যাচ্ছিল, সেই মিছিলে তিনিও ছিলেন। সেই মিছিল থেকে আরজি করে ঢুকে পড়েছিলেন। হাসপাতালে তাণ্ডবের দৃশ্য দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এর পর তিনি আবেগের বশেই ভাঙচুর চালান।
সৌমিককে শুক্রবার নাগেরবাজার থেকে গ্রেফতার হয়। নাগেরবাজার ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের অন্তর্গত। সৌমিক বলেন, ‘‘আমি মিছিলে গিয়েছিলাম। সবাইকে ভাঙচুর করতে দেখে আমি ইমোশনাল হয়ে ভাঙচুর করেছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে। তবে কোনও প্ররোচনা ছিল না। আমি নিজে থেকেই গিয়েছিলাম। আমার চেনা-পরিচিতি অনেকেই মিছিলে গিয়েছিল। রাস্তাতেও অনেকের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। ওরা আমার পরিচিত। আমার সঙ্গে জিম করে। কেউ নাগেরবাজারে থাকে, কেউ কুন্ডুবাগানে। কুন্ডুবাগান থেকে এক জন ধরা পড়েছে। বিকিদা ধরা পড়েছে বলে শুনলাম। ও আমার সঙ্গে জিম করে।’’
আরজি করে দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। তার মধ্যে একটি ভিডিয়ো সৌমিককে রড হাতে দরজা-জানলা ভাঙচুর করতে দেখা গিয়েছে। (আনন্দবাজার অনলাইন অবশ্য ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি।) তবে অনেকের সঙ্গে মিলে হাসপাতালের ভিতরে ভাঙচুর চালানোর কথা স্বীকার করেছেন সৌমিক। তাঁর দাবি, হামলাকারীদের অনেকের মুখ চেনেন তিনি। কিন্তু তাঁদের ঠিকানা তিনি জানেন না। ধৃতের দাবি, বৃহস্পতিবারই লালবাজার থেকে তাঁর বাড়িতে ফোন গিয়েছিল। তখন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। কৃষ্ণনগরে গিয়েছিলেন। দাদার থেকেই পুলিশের ফোন আসার বিষয়টি জানতে পারেন। এর পর শুক্রবার তিনি কৃষ্ণনগর থেকে ফিরেছিলেন নিজের বাড়িতে।
বুধবার মেয়েদের রাতের শহর দখল নেওয়ার শান্তিপূর্ণ মিছিলের সময়েই লাঠি হাতে জনা চল্লিশের একদল যুবক আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর চালান। হাসপাতালের গেটে দাঁড়ানো পুলিশকর্মীদের কয়েক জনকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়া হয়। তার পরেও যাঁরা আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন, তাঁদের বুকে-পেটে লাথি-ঘুষি মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর পর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভবনে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালায় ওই দল। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছিলেন ১২ জন। তার পর শুক্রবার সকালে আরও সাত জনের গ্রেফতারির খবর দেয় লালবাজার।