আরজি কর হাসপাতালের ১৩ জন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কর্তৃপক্ষ। —নিজস্ব চিত্র।
আরজি কর হাসপাতালের ১৩ জন সিনিয়র ডাক্তারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের ‘হুমকি সংস্কৃতি’তে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে তাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে। ‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়ে হাসপাতালে যে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে, তাদেরই এই ১৩ জনের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্তও করতে বলা হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট চেয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বুধবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ১৩ জন চিকিৎসকের নাম জানিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটিকে চিঠি দিয়েছেন হাসপাতালের সুপার সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়। চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন অধ্যক্ষ মানসকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তার এবং ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আমরা এই ১৩ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত কমিটি ওই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখুক। তদন্তে যা পাওয়া যাচ্ছে, রিপোর্ট আকারে তা যত দ্রুত সম্ভব আমাদের দিতে হবে। তদন্তে এই ডাক্তারদের বিরুদ্ধে পাওয়া নথিও আমাদের কাছে জমা দেবে কমিটি।’’
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই হাসপাতালের ‘হুমকি সংস্কৃতি’ নিয়েও একাধিক অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, একাধিক ডাক্তার এবং অন্য আধিকারিকেরা হাসপাতালে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছেন। জুনিয়র ডাক্তার এবং চিকিৎসক পড়ুয়াদের হুমকি দিয়ে থাকেন তাঁরা। অভিযোগের ভিত্তিতে ৫০-এর বেশি চিকিৎসক, হাউস-স্টাফ এবং ইন্টার্নকে চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। যত দিন পর্যন্ত না তদন্ত সম্পূর্ণ হচ্ছে, তত দিন তাঁদের হাসপাতালে প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখছে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে অভিযুক্তদের। তার মাঝেই এ বার সিনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধেও তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল।
এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘‘যে চিকিৎসক অধ্যাপকদের নাম উঠে এসেছে, তাঁদের অনেকেই থ্রেট কালচারের সঙ্গে যুক্ত। সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত। তদন্ত কমিটিতে তাঁদের ডাকা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীরা কেউ না কেউ কোনও না কোনও সময়ে এঁদের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। তা-ই তাঁরা অভিযোগ করেছেন। অভিযোগগুলির উপযুক্ত তদন্ত হওয়া দরকার।’’
যে ১৩ জনের নাম তদন্ত কমিটিকে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন হাসপাতালের নির্যাতিতার ময়নাতদন্ত করা এক চিকিৎসকও। তাঁকে ইতিমধ্যে একাধিক বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে সিবিআই। এ ছাড়া, আরজি করে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সিবিআই বাড়িতে হানা দিয়েছিল, এমন এক চিকিৎসকও রয়েছেন এই তালিকায়।