Urban Development Department

সংস্কার হয় না ভাড়া দিলেও, উচ্ছেদের নোটিস পেয়ে ক্ষুব্ধ আবাসিকেরা

নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে আছে সল্টলেকের ‘ফাল্গুনী’ আবাসনটি। দফতরের তরফে সেখানকার ৫০টিরও বেশি কোয়ার্টার্সে উচ্ছেদ-নোটিস পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ০৬:৪৬
Share:

আচমকাই দিন সাতেক আগে কিছু কোয়ার্টার্সকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছে নগরোন্নয়ন দফতর। ফাইল ছবি।

সকলেই চাকরিরত। মাস গেলে পদমর্যাদা অনুযায়ী মোটা টাকা ভাড়া দিতে হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁরা সপরিবার বাস করছেন সরকারি কোয়ার্টার্সে। আচমকাই দিন সাতেক আগে সেই সব কোয়ার্টার্সকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছে নগরোন্নয়ন দফতর। আবাসিকদের বলা হয়েছে এক মাসের মধ্যে কোয়ার্টার্স ছেড়ে দিতে। এ হেন সরকারি নির্দেশে কার্যত মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা অন্তত দেড়শো আবাসিকের।

Advertisement

নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে আছে সল্টলেকের ‘ফাল্গুনী’ আবাসনটি। দফতরের তরফে সেখানকার ৫০টিরও বেশি কোয়ার্টার্সে উচ্ছেদ-নোটিস পাঠানো হয়েছে। আবাসিকদের প্রশ্ন, এত বছর ধরে মোটা অঙ্কের ভাড়া দেওয়া সত্ত্বেও কেন সময় মতো আবাসন সংস্কার করা হবে না? কেনই বা সেটিকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করা হবে?

চাকরিতে প্রভাব পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় কেউই বিষয়টি নিয়ে খুব বেশি সরব হচ্ছেন না। তবে অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের ছেলেমেয়েরা পড়াশোনা করছে, অনেকের বাড়িতে বয়স্ক এবং অসুস্থ মানুষ রয়েছেন। ফলে, তাঁদের পক্ষে এক মাসের মধ্যে কোয়ার্টার্স ছাড়া সম্ভব নয়। বরং, এর প্রতিবাদে গণসংগঠন তৈরি করেআইনি পথে যাওয়া যায় কি না, সেই চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন নোটিস পাওয়া বাসিন্দারা।

Advertisement

এক আবাসিক বলেন, ‘‘এত বছর ধরে ভাড়া দিচ্ছি। আবাসন রক্ষণাবেক্ষণ করার দায়িত্ব তো নগরোন্নয়ন দফতরের। অথচ, তারা তা করেনি। আবাসনের বেহাল দশা তো সেই কারণেই। এখন আচমকা আমাদের উঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন?’’আদতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা এক মহিলা আবাসিকের কথায়, ‘‘আমাদেরঅনেকেরই কোয়ার্টার্সের চুক্তির মেয়াদ ফুরোয়নি। অত দূর থেকেঅফিস যাতায়াত করতে সমস্যা হচ্ছিল বলেই কোয়ার্টার নিয়েছি। আচমকা নোটিস দিয়ে উঠে যেতে বলা তো অমানবিক সিদ্ধান্ত।’’

সম্প্রতি ওই আবাসনে গিয়ে দেখা গেল, নগরোন্নয়ন দফতরের নোটিসএবং পরবর্তী সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে বাসিন্দারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন। তাঁদের অভিযোগ, নগরোন্নয়ন দফতরেররক্ষণাবেক্ষণের কাজের জন্য আবাসন চত্বরে একটি অফিস থাকলেও সেখানে কর্মী পর্যাপ্ত নেই। কোয়ার্টার্সগুলিতেহামেশাই ভেঙে পড়ে চাঙড়। মেরামতির জন্য আবেদন করলে সরকারি কর্মীদের পরিদর্শনে আসতেই দীর্ঘ সময় লেগে যায়।

আবাসিকেরা জানাচ্ছেন, বি-১১ ও বি-১২ নম্বরকোয়ার্টার্সের বিভিন্ন ফ্ল্যাটে নোটিস পড়েছে। ওই দু’টি বাড়ির দেওয়ালে ফাটলও দেখা দিয়েছে। দেওয়ালের গায়ে ‘বিপজ্জনক বাড়ি’ বলেকাগজে লিখে সেঁটে দেওয়া হয়েছে। ওই দু’টি কোয়ার্টার্স যে বিপজ্জনক এবং সেগুলির যে সারাইয়েরপ্রয়োজন রয়েছে, সে কথা মানছেন বাসিন্দারাও। তবে একই সঙ্গে তাঁরা দাবি তুলেছেন, কোয়ার্টার্স খালি করে দিতে হলে তাঁদের উপযুক্ত পুনর্বাসন দিতে হবে।

পাশাপাশি, যে প্রশ্নটি তাঁরা বার বার তুলছেন তা হল, কেন কোয়ার্টার্সগুলি এমন বিপজ্জনক অবস্থায় পৌঁছল? কেন মাসে মাসে ভাড়া পাওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত সেগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে না?

সূত্রের খবর, নোটিস প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে আবাসিক তথা সরকারি কর্মীদের অনেকেই নগরোন্নয়ন দফতরেরআধিকারিকদের কাছে দৌড়চ্ছেন। তবে তাঁদের ফিরতে হচ্ছে খালি হাতেই।

এ বিষয়ে জানতেনগরোন্নয়ন দফতরের এস্টেট অফিসার হীরকজ্যোতি মজুমদারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। দফতরের প্রধান সচিবখলিল আহমেদ শুধু জানিয়েছেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement