— প্রতীকী চিত্র।
শহরতলির তুলনায় মূল কলকাতায় মৌমাছির বিভিন্ন প্রজাতির কার্যগত বৈচিত্র বেশি। পাশাপাশি, বেঁচে থাকার জন্য লড়াইও কম। এমনই তথ্য উঠে এসেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিতত্ত্ব বিভাগের এক গবেষণায়। এই বিভাগের শিক্ষক পার্থিব বসু এবং অন্য দুই গবেষক অদিতি দত্ত এবং ইন্দ্রনীল সমাজপতির গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে ‘আরবান ইকো সিস্টেম’ জার্নালে।
গবেষকেরা কলকাতা এবং শহরতলির মোট ২০টি অঞ্চলের পার্ক ও বাগানকে বেছে নিয়েছিলেন। বৃহত্তর কলকাতার অঞ্চল হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে ইডেন গার্ডেন্স, যোধপুর পার্ক, বৈষ্ণবঘাটা, ব্যারাকপুর, বেহালা, হাওড়ার দাশনগর (এমএসএমই ট্রেনিং সেন্টার), সল্টলেক সেন্ট্রাল পার্ক, বি টি রোডে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, ধাপা, হাওড়ার বেতোর। শহরতলি হিসাবে বেছে নেওয়া এলাকাগুলি হল আমতা, আমতলা, বাগনান, বারাসত, দমদম পার্ক, ইকো পার্ক, নরেন্দ্রপুর, বজবজের কাছে নেচার পার্ক, সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া। পার্থিব জানালেন, পর্যবেক্ষণে চোখে পড়েছে, শহরতলির থেকে কলকাতায় মৌমাছির বিভিন্ন প্রজাতির কার্যগত বৈচিত্র বেশি। পরাগমিলনের কাজ তারা একাধিক ফুলে করতে পারে। কখনও বড় ফুল, আবার কখনও ছোট ফুলের পরাগমিলনে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। অন্য দিকে, শহরতলির মৌমাছিদের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে কার্যগত বৈচিত্র অনুপস্থিত। পার্থিব জানালেন, বিশ্বে প্রায় ২০ হাজার প্রজাতির মৌমাছি রয়েছে। এদের মধ্যে মাত্র ৪-৫টি প্রজাতি দলবদ্ধ ভাবে থাকে। মৌচাক বানায়। ভারতের প্রায় ৮০০ প্রজাতির মধ্যে ৩-৪টি প্রজাতি দলবদ্ধ ভাবে থাকে।
দেখা গিয়েছে, কীটনাশকের প্রভাবে শহরতলির মৌমাছিদের মৃত্যুর হার বেশি। এই সব অঞ্চলে সালফার ডাই অক্সাইডের সন্ধান মিলেছে। যার প্রভাব এই অঞ্চলের পতঙ্গদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। অথচ শহরে বায়ুদূষণ বেশি হলেও মৌমাছিরা তুলনামূলক ভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গবেষকদের পরামর্শ, যে সব গাছে পরাগমিলনের ফলে আনাজ, ফুল হয়, সেই সব গাছ শহরে রোপণের জন্য আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন। এর সঙ্গে স্বল্প পরিসরে ‘কিচেন গার্ডেন’ তৈরিরও প্রয়োজনীয়তা আছে বলে তাঁদের মত।