অরবিন্দ সেতু। নিজস্ব চিত্র
স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্টে অরবিন্দ সেতুর ‘বেয়ারিং’ পাল্টানোর বিষয়ে আগেই উল্লেখ করা হয়েছিল। তা ছাড়া সেতুর অন্য অংশেও মেরামতির প্রয়োজন। ওই সেতুর পুরনো নকশার একাংশ না পাওয়ায় সেতু মেরামতির জন্য দরপত্র ডাকতে সমস্যা হচ্ছে বলে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান। কী পদ্ধতিতে ওই সেতুর মেরামতি করা হবে, তা নিয়ে কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি।
কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এই সেতুর পুরনো নকশার সব অংশ এখনও পাওয়া যায়নি। সেই অংশ পাওয়া গেলে সেতুর সামগ্রিক মেরামতির ক্ষেত্রে সুবিধা হয়। সেই কারণে দরপত্র ডেকে কাজ শুরু করতে সময় লাগছে। শুধু এই সেতুটিই নয়,অন্য সেতু বা উড়ালপুল, যেগুলির স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে, সেগুলির মেরামতির জন্য পর্যালোচনা চলছে। তার পরেই দরপত্রের আহ্বান করে কাজ শুরু করা হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, টালা সেতু ভাঙার কাজ শুরু হওয়ার আগেই জরুরি ভিত্তিতে চিৎপুর সেতুর মেরামতি শুরু হয়েছে। তবে বাকি সেতু এবং উড়ালপুলগুলির মেরামতি বাকি। আগামী মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে সব ক’টি উড়ালপুলের মেরামতি শুরু করা হবে বলেও কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।
অরবিন্দ সেতু নিয়ে সমস্যা কোথায়?
কেএমডিএ সূত্রের খবর, উত্তর ও পূর্ব কলকাতার মধ্যে সংযোগকারী সেতু হিসেবে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন কলকাতা উন্নয়ন সংস্থা ওই সেতু তৈরি করে। তাদেরই ওই সেতু রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা ছিল। পরবর্তী কালে, কলকাতা উন্নয়ন সংস্থা (কেআইটি)-র সঙ্গে কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ) সংযোজিত হয়ে যাওয়ার পরে ওই সেতু রক্ষণাবেক্ষণের ভার কেএমডিএ-র উপরে বর্তায়। ফলে, কেএমডিএ-র কাছে ওই সেতুর কোনও নকশা ছিল না। আপাতত নকশা সংগ্রহের কাজও চলছে।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, সেতুর স্তম্ভের উপর ‘বেয়ারিং’ বদল ছাড়া ওই সেতুর মেরামতি প্রয়োজন। আধিকারিকেরা জানান, পুরনো নকশার কিছুটা পাওয়া গেলেও আরও কিছু কাঠামো এবং প্রযুক্তিগত বিষয় জানার প্রয়োজন রয়েছে।
ওই নকশা থেকেই চিহ্নিত করা সম্ভব তৎকালীন সময়ে সেতুর কোন অংশ কী ভাবে তৈরি হয়েছিল। সেই নকশার ভিত্তিতেই রক্ষণাবেক্ষণের এবং মেরামতির পরবর্তী পরিকল্পনা করা হবে।
আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, ‘বেয়ারিং’ সরিয়ে নতুন ভাবে ওই সেতু মেরামতি করার জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করা হবে তা নিয়েও বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গেও প্রাথমিক ভাবে কর্তৃপক্ষ আলোচনা করেছেন। ওই সেতু সারানোর পদ্ধতিগত বিষয় নিয়েও সেতু বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। তবে সেতুটি পুরনো হলেও তা এখনই ভেঙে পড়ার মতো কোনও আশঙ্কা নেই বলেও কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে।