আইনের স্নাতক হওয়ার পরীক্ষায় পাশ করেছেন কয়েক মাস আগেই। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ‘প্রভিশনাল সার্টিফিকেট’ও মিলেছে। এমনকি, পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিলে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদনও করেছেন। তবু আইনজীবীর স্বীকৃতি পাচ্ছেন না কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু পড়ুয়া। যার ফলে পড়াশোনা শেষ করেও পেশাগত জীবনে প্রবেশ করতে পারছেন না তাঁরা।
সূত্রের দাবি, প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই স্নাতক হওয়া পড়ুয়াদের তালিকা রাজ্য বার কাউন্সিলে জমা পড়ে। আবেদনপত্রের ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার সময়ে সেই তালিকা দেখে মিলিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেই তালিকা রাজ্য বার কাউন্সিলে এখনও যায়নি বলেই ওই সূত্রের দাবি।
এ বিষয়ে বার কাউন্সিলের এক কর্তা জানান, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই তালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে। কারা পাঠায়নি, তা নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে নথি ঘেঁটে দেখতে হবে। তবে কাউন্সিল সূত্রের দাবি, তালিকা জমা পড়লে নতুন আইনজীবীদের রেজিস্ট্রেশন পেতে দেরি হওয়ার কথা নয়। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অনেকেরই অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তালিকা না-পাঠানোর ফলেই এই দেরি হচ্ছে বলে তাঁরা জেনেছেন।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ যোগেশচন্দ্র চৌধুরী আইন কলেজ থেকে স্নাতক পরীক্ষায় পাশ করা শুভজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানালেন, তিনি ‘প্রভিশনাল সার্টিফিকেট’ হাতে পাওয়ার পরে জানুয়ারির শেষে রেজিস্ট্রেশনের আবেদন জমা দিয়েছিলেন। এখনও রেজিস্ট্রেশন পাননি।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর এক স্নাতক রাজ্যশ্রী মুখোপাধ্যায় বললেন, ‘‘এ ভাবে রেজিস্ট্রেশনে দেরি হলে পেশাগত জীবনে আমরা পিছিয়ে পড়ব। আমাদের সঙ্গে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা পড়ুয়ারা রেজিস্ট্রেশন পেয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা তো আমাদের সিনিয়র হয়ে যাবেন।’’ তাঁর বক্তব্য, একেই কোভিডের জন্য অনেক ক্ষতি হয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘প্রভিশনাল সার্টিফিকেট’ দিতেও দেরি করেছে। তার পরেও এই বিপত্তি!
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের অনেকেরই বক্তব্য, আইন একটি পেশাদার বিষয়। তাই পড়ুয়াদের পেশাগত জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহমর্মিতা ও সাহচর্য প্রয়োজন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে উল্টোটাই দেখা যাচ্ছে। যদিও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, পাশ করা পড়ুয়াদের তালিকা বার কাউন্সিলে জমা পড়েনি, এমন কোনও তথ্য তাঁদের কাছে নেই। জমা না পড়লে তাঁদের কাছে খবর থাকত। তবে তিনি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।