বিধাননগর ও বালিতে পুলিশ আর মস্তানদের দিয়ে ভোট করাবে তৃণমূল— কলকাতায় এসে শনিবার এমনটাই দাবি করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। জবাবে পুরমন্ত্রী ফিরহার হাকিমের পাল্টা দাবি, ‘‘নাচতে না জানলে উঠোনের দোষ দিয়ে লাভ নেই। কংগ্রেস আগে থেকেই হেরে বসে আছে। মানুষের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। তাই সন্ত্রাস সন্ত্রাস করে চিৎকার করছে।’’
আগামী ৩ অক্টোবর বিধাননগর পুরনিগমের ৪১টি আসন এবং হাওড়ার সঙ্গে সংযুক্ত বালির ১৬টি শূন্যপদে নির্বাচন। তা মাথায় রেখে এ দিনই প্রথম ভোট-প্রচার শুরু করে কংগ্রেস। শনিবার বিধাননগর ও বালি— দু’জায়গাতেই দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে কর্মিসভা করেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। দলীয় কর্মীদের তাঁর পরামর্শ, শাসক দলের সন্ত্রাসের সামনে নতি স্বীকার না করে মানুষকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বিধাননগরে ৩৫টি ওয়ার্ডে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। বালিতে অবশ্য ১৬টি শূন্যপদেই প্রার্থী দিয়েছে তারা।
এ দিন বালিতে অধীরবাবু পুলিশকে তৃণমূলের ব্লক ও জেলা কমিটির সভাপতি বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘‘পুলিশ আমাদের রক্ষা করবে এটা ভাবা ভুল। সিপিএম ৩৪ বছর পরে পুরভোটে পুলিশ আর মস্তান ব্যবহার করেছিল। তৃণমূল চার বছরেই তা শুরু করে দিয়েছে।’’ বিধাননগরে তিনি বলেন, ‘‘বিরোধী থাকার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনকে একাধিক বার সন্ত্রাসের অভিযোগ করে চিঠি লিখেছেন। এখন উনি নিজেই রাজ্যকে বিরোধী শূন্য করতে চাইছেন।’’ কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না বলে নির্বাচন কতটা অবাধ হবে তা নিয়ে প্রশ্নও তোলেন তিনি। যদিও পুরমন্ত্রী জানান, বনগাঁয় কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই ভোট হয়েছিল। তাতেও তৃণমূলই জিতেছিল। তিনি বলেন, ‘‘জোর থাকলে কংগ্রেস মাঠে নেমে লড়ুক। তৃণমূল মাঠে নেমে লড়ে। মানুষের কাছে যায়।’’
দু’জায়গাতেই অধীরবাবু বলেন, ‘‘ভোট দেওয়ার জন্য মানুষকে বুথ পর্যন্ত নিয়ে আসার দায়িত্ব নিতে হবে দলীয় কর্মীদের। আগে থেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে যোগাযোগ বাড়াতে হবে।’’ নির্বাচন লড়তে দলের তরফ থেকে আর্থিক সহায়তার কথাও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে জানান কয়েক জন দলীয় প্রার্থী। অধীরবাবু বলেন, ‘‘আমাদের দল এখন বিপিএল হয়ে গিয়েছে। প্রার্থীরা যখন প্রচারে যাবেন, তখন নিজেদের জন্য ভোটারদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করুন। যাঁরা চাঁদা দেবেন আপনার প্রতি তাঁদের অনুভূতি আছে বলেই বুঝবেন। এতে দল হিসাবে কংগ্রেস মানুষের সামনে আসবে।’’
এ দিন ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। উত্তর ২৪ পরগনার বিজেপি নেতা গোপাল সরকারের অভিযোগ, শাসক দলের আতঙ্কে ২৭ নম্বরের পরে ১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকেও তাঁদের প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। মহিলা প্রার্থীদের ভয় দেখানো হচ্ছে।