রক্ষী মোতায়েনের পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম থেকেও মহিলা কামরায় নজরদারি চালানো হবে। ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি রাতের ডাউন শান্তিপুর লোকালে এক তরুণীকে যৌন হেনস্থা এবং মারধরের ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে লোকাল ট্রেনের মহিলা যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে। সেই কারণে ঠিক হয়েছে, রাতে লোকাল ট্রেনের মহিলা কামরায় নিরাপত্তারক্ষী
মোতায়েন করা হবে। এর পাশাপাশি, বিভিন্ন স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকেও মহিলা কামরায় চালানো হবে নজরদারি।
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, শান্তিপুর লোকালের মতো ঘটনা আর যাতে না ঘটে, তার জন্যই দ্বিস্তরীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়েছে। যাতে মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় কোনও পুরুষ যাত্রী বা দুষ্কৃতীরা উঠতে না পারে। শিয়ালদহ রেল পুলিশ সুপার বরুণবদনা চন্দ্রশেখর জানান, রেল পুলিশ যাত্রীদের মনোবল বৃদ্ধি করতে এবং নিরাপত্তার স্বার্থে একগুচ্ছ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
গত শুক্রবার রাতে ডাউন শান্তিপুর লোকালে চেপে নদিয়ার ফুলিয়া থেকে শিয়ালদহে ফিরছিলেন এক মহিলা। অভিযোগ, দমদম স্টেশন ছাড়ার পরে এক যুবক তাঁকে যৌন হেনস্থা এবং মারধর করে। ট্রেনের ওই মহিলা কামরা সে সময়ে ফাঁকাই ছিল। ভিতরে রেল পুলিশ বা কোনও রক্ষীও ছিলেন না। ঘটনার সময়ে মহিলা যে ফেসবুক লাইভ করেছিলেন, সেই ছবি দেখেই পরে অভিযুক্তকে শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হয়।
ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে কী বলা হয়েছে রেল পুলিশের নির্দেশিকায়?
রেল পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতের ওই ঘটনার পরেই রেলরক্ষী বাহিনী বা আরপিএফ-এর সঙ্গে বৈঠক করা হয়। বৈঠকে ঠিক হয়েছে, যে সমস্ত লোকাল ট্রেন শান্তিপুর বা বনগাঁর মতো দূরের জায়গা থেকে সন্ধ্যার পরে ছাড়ে এবং গন্তব্যে পৌঁছতে অনেকটা রাত হয়ে যায়, সেই সমস্ত ট্রেনের মহিলা কামরায় নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা হবে। ওই দুই বাহিনী মিলেই ঠিক করবে, কোন ট্রেনে কাদের রক্ষী থাকবে।
এর আগেও মহিলা কামরায় রেল পুলিশ থাকত। কিন্তু কর্মীর অভাবে তা ছিল অনিয়মিত। রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, প্রতিটি ট্রেনে রক্ষী মোতায়েন করা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। কারণ, অত লোক নেই। তাই যে সমস্ত ট্রেন রাত করে গন্তব্যে পৌঁছয়, সেগুলির তালিকা তৈরি করে রক্ষী রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রক্ষী মোতায়েনের পাশাপাশি প্ল্যাটফর্ম থেকেও মহিলা কামরায় নজরদারি চালানো হবে। এ বিষয়ে রেল পুলিশের প্রতিটি থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহিলা কামরা যেখানে দাঁড়ায়, প্ল্যাটফর্মের সেই নির্দিষ্ট জায়গায় আগে থেকেই মোতায়েন রাখা হবে বাহিনীর সদস্যদের। যাতে মহিলাদের কামরায় অবাঞ্ছিত কেউ উঠতে না পারেন, বা উঠলেও রেল পুলিশ যাতে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারে।
রেল পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, বাহিনীর যা পরিকাঠামো ও লোকবল, তা দিয়ে সব স্টেশনে ওই নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। তাই আপাতত তিন-চারটি স্টেশন অন্তর একটি করে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে লোক রাখা হচ্ছে ওই নজরদারির জন্য।