—ফাইল চিত্র।
বিপদে পড়ে অস্থির ভাবে ফোন করছেন মানুষজন। কোনও হাসপাতালে বেড পাওয়া যাবে? কোথাও একটু অক্সিজেন পাওয়া যাবে?
আর খড়কুটোর মতো এই সাহায্যগুলো আঁকড়ে ধরতে চাওয়া অসহায় মানুষদের জন্য, এই অতিমারির মধ্যেও প্রতারণার ফাঁদ বিছানোর অভিযোগ উঠছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার বাগুইআটি থানায় এমনই এক ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা অনন্য চট্টোপাধ্যায়।
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন অনন্যর শ্যালিকা। আপাতত গ্রে স্ট্রিটের বাড়িতে কোয়রান্টিনে রয়েছেন তিনি। সোমবার সকাল থেকে তাঁর দেহে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করে। হন্যে হয়ে অক্সিজেনের খোঁজ শুরু করেন অনন্য। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “অনেক আগে রক্তের প্রয়োজনে ফেসবুকের মাধ্যমে এক ব্যক্তির থেকে সাহায্য পেয়েছিলাম। এ বারও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি শচীন আগরওয়াল নামে এক ব্যক্তির ফোন নম্বর দেন। সোমবার দুপুরে তাঁকে ফোন করি। তিনি বলেন, অক্সিজেন পাওয়া যাবে।”
অনন্য জানান, ১০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আট হাজার টাকা চান শচীন। অন্য একটি ফোন নম্বর দিয়ে বলেন, অনলাইনে টাকা মিটিয়ে দিতে। শচীনকে বিশ্বাস করে অনন্য তখনই আট হাজার টাকা দিয়ে দেন। কিন্তু অভিযোগ, সোমবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছয়নি। বিকেলের পরে শচীনের ফোন বন্ধ হয়ে যায়। মরিয়া হয়ে অনন্য ক্রমাগত চেষ্টা করে গেলে রাত আটটা নাগাদ এক বার ফোন ধরেন শচীন। আশ্বাস দেন, আধ ঘণ্টার মধ্যে অক্সিজেন পৌঁছে যাবে। কিন্তু, মঙ্গলবার রাত পর্যন্তও আসেনি সেই অক্সিজেন।
অনন্য বলেন, “বাধ্য হয়ে আমরা অন্য জায়গা থেকে পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডার জোগাড় করে কাজ চালাচ্ছি।’’ মঙ্গলবার বিধাননগর কমিশনারেটের সাইবার শাখায় ইমেল করে অভিযোগ জানান তিনি। তাঁকে বলা হয়, স্থানীয় থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে হবে। সন্ধ্যায় বাগুইআটি থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন অনন্য।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শচীনকে ফোন করে সল্টলেকে অক্সিজেন লাগবে বলে জানানো হয়। শচীন বলেন, ‘‘২০ লিটার অক্সিজেনের জন্য ১২ হাজার টাকা লাগবে। তার ৫০ শতাংশ টাকা অগ্রিম হিসেবে মেটাতে হবে অনলাইনে।’’ অনন্যর প্রসঙ্গ উত্থাপন করলে শচীন দাবি করেন, অক্সিজেন পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। না পৌঁছলে কিছু করার নেই।