উড়ালপুলের ১২ এবং ১৩ নম্বর স্তম্ভের উপরে যে স্ল্যাব ছিল তা হঠাৎই ভেঙে পড়ে। নিজস্ব ছবি
এ বার উড়ালপুল নির্মাণের উপকরণ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন খোদ কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি বাঘা যতীন উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে যে রিপোর্ট সামনে এসেছে, তারই ভিত্তিতে উপকরণের মান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কেএমডিএ আধিকারিকেরা।
কর্তৃপক্ষের মতে, বাঘা যতীন উড়ালপুলের কাঠামো ঠিক থাকলেও সেটির একাংশের উপকরণের মান সন্তোষজনক নয়। ফের ওই অংশের স্বাস্থ্য পরীক্ষা হতে পারে। যে নির্মাণ সংস্থা ওই উড়ালপুলের দায়িত্বে ছিল, তাদের সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা হবে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার চূড়ান্ত রিপোর্ট চলতি মাসের শেষে অথবা আগামী মাসে জমা পড়ার পরেই উপকরণের মান পরীক্ষার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।
কেএমডিএ-র এক আধিকারিকের কথায়, বাঘা যতীন উড়ালপুলের ভার বহন ক্ষমতার যে পরীক্ষা হয়েছে, সেখানে ত্রুটি পাওয়া যায়নি। কিন্তু উড়ালপুলের ১২ এবং ১৩ নম্বর স্তম্ভের উপরে যে স্ল্যাব ছিল তা হঠাৎই
ভেঙে পড়ে। এর আগেও ওখানে এই ঘটনা ঘটেছিল। একই জায়গায় কেন বারবার ঘটছে, তার কারণ হিসেবে উপকরণের মানকে প্রাথমিক ভাবে দায়ী করছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। কর্তৃপক্ষের মতে, ‘‘যে ক’টি উড়ালপুল এবং সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে, তাদের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। যে সংস্থা পরীক্ষা করছে তাদের দ্রুত স্বাস্থ্য রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তা দেখেই সেতু বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে কথা বলে মেরামতি করা হবে।’’
কেএমডিএ ইঞ্জিনিয়ারদের আশঙ্কা কালীঘাট উড়ালপুল নিয়েও। তাঁদের দাবি, যে ক’টি স্তম্ভ টালি নালার জলে ডুবে রয়েছে সেগুলি ক্ষয়িষ্ণু। ওই সেতুর উপরে ভারী যান চলাচল নিষিদ্ধ করতে পুলিশকে আগেই জানানো হয়েছিল। তা বাস্তবায়িত হয়েছে। একই ভাবে জিঞ্জিরাবাজার-বাটানগর উড়ালপুলের নির্মাণ উপকরণ নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। সে কারণেই ছ’মাস আগে উদ্বোধন হওয়া উড়ালপুলের রাস্তার পিচ উঠে গিয়েছে।
উল্টোডাঙা উড়ালপুল নিয়ে গত সোমবার কেএমডিএ-র আধিকারিকেরা আলোচনা করেন। ওই উড়ালপুলের ৪০ মিটারে স্টিল গার্ডারের বাঁকা অংশ, যা ১৯ এবং ২০ নম্বর স্তম্ভের উপরে দাঁড়িয়ে, সেখানেই ফাটল চিহ্নিত হয়েছিল গত জুলাইয়ে। উড়ালপুলের ওই অংশটিতেই সব থেকে সমস্যা বলে জানা গিয়েছে। গত রবিবার শিয়ালদহ উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামী সপ্তাহে তার রিপোর্ট জমা পড়বে বলে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।