নবমীর সন্ধেয় পুজো মণ্ডপে মানুষের ঢল।
মেঘলা আকাশের দুরুদুরু আশঙ্কার ছায়া ঢেকেছে মহানবমী। মহোৎসবের মহালগ্ন, উৎসবের অন্তিম নিশিতে জল ঢালবে না তো আকাশ? সে যা হয় হোক, দেখা যাবে। ছাতাকে সঙ্গী করে সকাল থেকেই পথে পথে, প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে চলে এসেছেন মানুষ। কলকাতার দক্ষিণ, মধ্য পেরিয়ে উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত ভিড়ের পায়ে পায়ে চলছে উৎসবের পথ।
আরও পড়ুন: ফেসবুক লাইভ @ বাগবাজার সর্বজনীন
এমনিতেই এ দিনটা বড় অদ্ভুত। এ দিন, এ রাতেই মহোৎসবের তুঙ্গলগ্ন। আবার এ দিনই তো সকাল থেকেই মনে পড়ে যায়, আজই শেষ। এ নিশি কাটলেই উৎসবের আনন্দবংশী বদলে যাবে বিদায়ের বেদনাসুরে। ছোট থেকে বুড়ো, সবারই বুকে বুকে এ দিনের সুর—যেও না নবমী নিশি—যেও না।
বৃষ্টি উপেক্ষা করেই রাজপথে মানুষ। ছাতা মাথায় চলছে ঠাকুর দেখা।
যেও না বললেও দিন চলে যায়, কে না জানে! তাই চলো বেরিয়ে পড়ি। উৎসবের চরম ক্ষণকে চেটেপুটে নিতে, মন আর শরীর জুড়ে মেখে নিতে বাঙালি আজ রাস্তায়। বেলা, দুপুর গড়িয়ে বিকেল, বিকেল গড়িয়ে সময় যত এগোয়, ভিড় বাড়ে চারপাশে।
আরও পড়ুন: অষ্টমীতে শুরু পরের বছরের শিল্পী বাছাই
বাড়ি থেকে বারোয়ারি, পুজোর আমেজে আজ বিভোর বাঙালি। প্রাণের পুজো দেখতে এ দিন বৃষ্টি মাথায় নিয়েই উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতার মণ্ডপে মণ্ডপে নেমেছে মানুষের ঢল। সবমিলিয়ে মহানবমীর সন্ধে উৎসবের মেজাজে জমজমাট। সাবেকিয়ানায় সামিল হতে উত্তর কলকাতার শোভাবাজারে এ দিন ছিল অগণিত মানুষের ভিড়। বেলা যত গড়িয়েছে, ভিড় বেড়েছে বেহালার নস্করপুর, চেতলা অগ্রণী, একডালিয়া এভারগ্রিনে। বৃষ্টির চোখ-রাঙানি উপেক্ষা করেই দেশপ্রিয় পার্ক, নাকতলা উদয়নের ভিড় ছিল দেখবার মতো। সন্ধে থেকেই ভিড় বেড়েছে ৬৬ পল্লীর পুজোতে। ছাতা সঙ্গী করেই মণ্ডপে প্রবেশ করেছে মানুষ। অভিনব মণ্ডপসজ্জা দেখতে আষাঢ়তলা বাদাম সঙ্ঘে ভিড় জমিয়েছেন অগণিত মানুষ।
বাদামতলা আষাঢ় সঙ্ঘে মানুষের ঢল।
সন্ধে যত গড়িয়েছে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে যানজট। ট্রাফিক সূত্রে খবর, ই এম বাইপাসে যান চলাচল খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। এ দিন যানজট দেখা গিয়েছে, দুর্গাপুর ব্রিজে, উল্টোডাঙার দিকে সিআইটি রোডে এবং হাডকো মোড়ে। তুলনামূলক ভাবে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে এ দিন যানজট অনেক কম ছিল। দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় আটকে থাকতে হয়নি মানুষকে। তেমনি এ দিন যানজট অনেক কম হয়েছে কলেজ স্ট্রীটে।
ছবি:সুমন বল্লভ।