বেলঘরিয়া

নির্মাণ ঘিরে বচসা, অভিযোগ

আবাসন বানাতে গেলে দাবি মতো ‘তোলা’ চাই। সঙ্গে ক্লাবের দোতলাও তৈরি করে দিতে হবে। সেই শর্ত না মানায় ক্লাবের সদস্যেরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করেছেন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেন একটি নির্মীয়মাণ আবাসনের জমির মালিকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৩৭
Share:

আবাসন বানাতে গেলে দাবি মতো ‘তোলা’ চাই। সঙ্গে ক্লাবের দোতলাও তৈরি করে দিতে হবে। সেই শর্ত না মানায় ক্লাবের সদস্যেরা কাজ বন্ধ করে দিয়ে তাঁদের বেধড়ক মারধর করেছেন ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ তুললেন একটি নির্মীয়মাণ আবাসনের জমির মালিকেরা। যদিও পুরো বিষয়টিই সাজানো বলে দাবি ওই ক্লাবের সদস্যদের। উল্টে তাঁদের দাবি, আবাসন বানানোর নামে প্রতারণামূলক, অসামাজিক নানা কাজ শুরু হয়েছিল। তার প্রতিবাদ করায় এই মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।

Advertisement

রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটি পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বেলঘরিয়া দেশপ্রিয়নগরে। অভিযোগ ওই এলাকারই উদয়নপল্লি বালক সঙ্ঘ ক্লাবের বিরুদ্ধে।
জমির মালিকদের অভিযোগের ভিত্তিতে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ ওই রাতেই ক্লাবের সভাপতি জগন্নাথ কাঞ্জিলাল, সহ-সভাপতি তথা ওয়ার্ড ও পল্লি সম্পাদক অলোক দে-কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে অবশ্য তাঁদের ছেড়েও দেওয়া হয়। অলোকবাবু বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে ক্লাবের কোনও যোগ নেই। কেনই বা টাকা চাওয়া হবে? আবাসন তৈরির নামে কিছু অন্যায় হচ্ছিল। সকলে পল্লি কমিটির কাছে অভিযোগ করছিলেন। তাই প্রতিবাদ করেছিলাম মাত্র।’’

দেশপ্রিয়নগরের সুরেন্দ্রনাথ কর সরণিতে সাড়ে ১৩ কাঠা জমির উপরে প্রায় দেড় বছর আগে আবাসন তৈরির কাজ শুরু করেছেন বেলঘরিয়া রথতলার বাসিন্দা প্রোমোটার নির্মলা রাই। ওই জমিটিতে পাঁচটি পরিবারের অংশ রয়েছে। তাদেরই এক অংশীদার সুস্মিত ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘আগে আরও বেশি জমি ছিল। কিন্তু বিভিন্ন সময়ে তা দখল করে নেওয়া হলেও আমরা কিছু বলিনি। এই জমিতে আবাসন তৈরি শুরু হতেই বিভিন্ন ভাবে সমস্যা তৈরি করতে থাকেন ক্লাবের সদস্যেরা।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, শেষমেশ ক্লাবের দাবি মতো দোতলা তৈরির কাজও শুরু হয়েছিল। আবাসনের চার তলার ঢালাইয়ের কাজ পরে করে আগে ক্লাবের দোতলা তৈরির কাজ শেষ করা হচ্ছে না কেন, তা নিয়ে রবিবার দুপুরে বেশ কয়েক জন সদস্য নির্মীয়মাণ আবাসনে এসে হামলা চালান বলেও জানান সুস্মিতবাবু। তাঁর কথায়, ‘‘ক্লাবের ছেলেরা এসে আবাসনের কাজ বন্ধ করে দেন। সেখানে থাকা জমির অংশীদারদের ধাক্কা মারেন। তার পরে বেধড়ক মারধর করলে আমার কানের পর্দায় ও হাড়ে চোট লাগে। আরও কয়েক জন আহত হয়েছেন।’’ পাশাপাশি প্রোমোটার নির্মলাদেবীর অভিযোগ, ‘‘৮ লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন। আমি দেড় লক্ষ দিয়েছিলাম। বালি, সিমেন্ট, স্টোনচিপ, রড— সব কিছুই তুলে নিয়ে চলে যেতেন ক্লাবের সদস্যেরা। ওঁদের বলেছিলাম, আবাসনের চারতলা হয়ে গেলেই ক্লাবের কাজে হাত দেব।’’

Advertisement

যদিও টাকা চাওয়া ও দোতলা তৈরির দাবি করার অভিযোগ মিথ্যা বলেই দাবি অলোকবাবুদের। তিনি বলেন, ‘‘ওই জমি নিয়ে শরিকি সমস্যা ছিল। পল্লি কমিটির কাছে আবেদন করলে আমরাই সব মিটমাট করে দিই। পরে প্রোমোটারই নিজে থেকে আমাদের সঙ্গে দেখা করে ক্লাবে‌র দোতলা বানিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। তার জন্য ছাদ ভেঙে ফেলে রেখেছেন।’’ ক্লাবের সদস্যদের আরও অভিযোগ, আবাসন বানানোর জন্য যাঁদের থেকে ইমারতি দ্রব্য আনা হচ্ছে, তাঁরা পাওনা টাকা না পেয়ে পল্লি কমিটির কাছে বারবার অভিযোগ জানাচ্ছেন। পাশাপাশি, নির্মীয়মাণ আবাসনের চারদিকে জঙ্গলে ভরে গিয়েছে, রাতে বিভিন্ন অসামাজিক কাজ হচ্ছে। এ সব নিয়ে ক্লাবের প্রবীন সদস্যেরা প্রতিবাদ করে কথা বলতে গেলে তাঁদের হেনস্থা করেন জমির মালিকেরা। তখনই সামান্য বচসা-হাতাহাতি হয় বলে দাবি অলোকবাবুদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement