বাগবাজার স্ট্রিটে এ ভাবেই বসে বাজার। ছবি:স্বাতী চক্রবর্তী
দীর্ঘ দিন ধরেই বাগবাজার স্ট্রিটের রাস্তা জুড়ে বসছে বাজার। এই নিয়ে বিভিন্ন তরফ থেকে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগও জমা পড়েছে। সম্প্রতি অভিযোগ এসেছে গিরিশ মঞ্চ ও ফণিভূষণ বিদ্যাবিনোদ যাত্রা মঞ্চের তরফেও। এই দুই মঞ্চের কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, রাস্তার উপরে বসা বাজারের জন্যে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা শিল্পী এবং দর্শকরা সমস্যায় পড়ছেন।
অভিযোগ, রাস্তার বাজারের জন্যে সকালে অনুষ্ঠানের মহড়ার সময়ে এবং বিকেলে অনুষ্ঠান চলাকালীন গাড়ি ঢোকার রাস্তা থাকে না। হাঁটার রাস্তাও দিনে দিনে সঙ্কীর্ণ হচ্ছে। এমনকী বাজার শেষে বর্জ্যের দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চাপা দিয়ে দাঁড়ান অনুষ্ঠানে আসা দর্শকেরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বহু বছরের পুরনো বাগবাজারের স্থায়ী বাজারটি। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সেই বাজার ঘিরেই ছিল স্থানীয়দের নিত্য কেনাবেচা। বাগবাজার অঞ্চলের বাসিন্দা মঞ্জু দেবনাথ বলেন, ‘‘ছোটবেলায় কিন্তু রাস্তায় বাজার বসত না। গুটি কয়েক দোকান বসত ফুটপাথে। প্রায় ১৫টি শাঁখার দোকান, আলু-পেঁয়াজ, আনাজ, মাছ-মাংসের একাধিক দোকান বসত বাজারের ভিতরে।’’ অন্য এক বাসিন্দার বক্তব্য, ‘‘এখন বাজারের ভিতরে মাছের দোকান ছাড়া বিশেষ কিছু নেই। বেশিরভাগ দোকান বন্ধ। কোনওটি আবার গুদাম হিসেবে ব্যবহার করেন রাস্তার ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারাও বাধ্য হন বাইরে থেকে বাজার করতে।’’ বাজারের ভিতরের ব্যবসায়ীদের কথায়, আগে এত ব্যবসায়ী ছিল না। বাইরের ব্যবসায়ীদের জন্যে ভিতরের ব্যবসা মার খাচ্ছিল। তাই ব্যবসায়ীরা ভিতরের দোকান ছেড়ে বাইরে বসছেন।
গিরিশ মঞ্চের প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রতি সন্ধ্যায় সরকারি দুগ্ধ সরবরাহকারী সংস্থার গাড়ি মঞ্চের টিকিট ঘরের দরজা বরাবর দাঁড়ায়। বার বার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, যাত্রা মঞ্চের ঠিক সামনে শববাহী গাড়ি বা অ্যাম্বুল্যান্স দাঁড় করানো থাকে। দর্শকদের পক্ষে তা বেশ অস্বস্তিকর।
এই রাস্তা কলকাতা পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডে। স্থানীয় কাউন্সিলর বাপি ঘোষ বলেন, ‘‘রাস্তায় বাজারটি বহু বছর ধরেই বসছে। ব্যবসায়ীদের তুলে রাস্তা খালি করা হয়তো অসম্ভব। তবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। আগের থেকে কিছুটা হয়েছেও। বাজারের বর্জ্য দুপুরেই পরিষ্কার করা হয়। আরও দ্রুত করার চেষ্টা করব। নার্সিংহোমের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে অ্যাম্বুল্যান্স বা শববাহী গাড়িগুলি ওখান থেকে দূরে সরিয়ে রাখার অনুরোধ করব।’’ এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, ‘‘সমস্যাটা জানি। নীতি মেনে হকারদের বসতে হবে। একই সঙ্গে বাজারের ভিতরে যাতে ব্যবসায়ীরা বসেন তাও নিশ্চিত করতে হবে।’’