স্বস্তি: স্কুল খোলার কথা ঘোষণার পরে অভিভাবকেরা। বুধবার রানিকুঠিতে জি ডি বিড়লার সামনে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য।
ছ’দিনের অচলাবস্থার পরে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে খুলছে জি ডি বিড়লা স্কুল।
স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রিন্সিপাল শর্মিলা নাথকে আপাতত সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। দুই ভাইস প্রিন্সিপাল সাময়িক ভাবে প্রিন্সিপালের দায়িত্ব সামলাবেন। আজ, বৃহস্পতিবার স্কুলের সিনিয়র সেকশন খুলবে। জুনিয়র বিভাগ শুরু হবে শুক্রবার থেকে।
মঙ্গলবার স্কুল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ এবং রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে প্রিন্সিপালের অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবি তুলেছিলেন অভিভাবকেরা। তখন ঠিক হয়, বুধবার এ নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ দিন বিকেল থেকে অভিভাবক ফোরাম ও অন্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক হয় স্কুল কর্তৃপক্ষের। প্রথমে দু’পক্ষই অনড় ছিল। কর্তৃপক্ষ শর্মিলাদেবীকে রেখেই স্কুল খুলতে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু অভিভাবকদের শর্ত ছিল, প্রিন্সিপালকে সরিয়ে তবেই খোলা হোক স্কুল। রাত দশটা নাগাদ প্রিন্সিপালের সরে যাওয়া ও স্কুল খোলার কথা ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: বিক্ষোভই দু’ভাগ, মাঝে রইল পুলিশ
চার বছরের এক ছাত্রীর উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পরে গত শুক্রবার থেকেই স্কুলের সামনে চলছিল অভিভাবকদের বিক্ষোভ।
এই সময়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্কুল বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু প্রশাসন-সহ বিভিন্ন মহল থেকেই স্কুল খোলার বার্তা আসছিল। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তৃণমূলের এক সমাবেশে বলেন, ‘‘আইন আইনের পথে চলবে। এখানে আমরা কোনও রকম হস্তক্ষেপ করি না। ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমে নৃত্য করে বেড়াচ্ছে। চাইছে ছেলেমেয়েগুলোর পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে। সব বন্ধ করে দিতে।’’
এ দিন আবার একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা স্কুলের সামনে পাল্টা জমায়েত করে স্কুল খোলার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। ছাত্রছাত্রীদের অনেককে স্কুলের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। এক সময়ে বিক্ষোভরত দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি। দু’পক্ষের মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ে পুলিশ। পরে স্কুল খোলার ঘোষণা হতে হাততালি দিয়ে ওঠেন অনেকে।
বুধবার জি ডি বিড়লা স্কুলের এক ক্লাসটিচার, এক সাফাইকর্মী, নিরাপত্তারক্ষী ও আয়াকে লালবাজারে ডেকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাপ্রধান বিশাল গর্গ বলেন, ‘‘তদন্তের স্বার্থে স্কুলের আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীও এ দিন বলেছেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। যে দোষ করেছে শাস্তি পাবে।’’