ফাইল চিত্র।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিলেন চিকিৎসক মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে তাঁর দাবি। চিকিৎসক মহলের একাংশের মতে, রাজনৈতিক কোনও ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন নির্দেশ মানসিক ‘চাপ’ হয়ে উঠেছিল বলেই এই পদত্যাগ।
অবসরের পরেও ওই পদে রাখা হয়েছিল মঞ্জুদেবীকে। আগামী জুন পর্যন্ত তাঁর মেয়াদ ছিল। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ভবনে পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন মঞ্জুদেবী। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বেশ কয়েক দিন ধরে অসুস্থ আমি। শারীরিক চাপ আর নিতে পারছি না। কারও সঙ্গে কোনও মতানৈক্য কিংবা মানসিক চাপের বিষয় নেই।’’ প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, স্বাস্থ্য শিবিরের একাংশের জল্পনা, সাম্প্রতিক কালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নাম জড়িয়েছে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নির্মল মাজির। তা নিয়ে বিব্রত
ছিলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনেকেই।
করোনা পরিস্থিতিতে বহু মূল্যের ইঞ্জেকশন উধাও হওয়া থেকে শুরু করে সম্প্রতি মেডিক্যাল কলেজের হেরিটেজ বিল্ডিং ‘রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব অপথ্যালমোলজি’ (আরআইও) ভেঙে সেখানে ট্রমা কেয়ার সেন্টার গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এ সবে নাম জড়ায় নির্মলের। সেই বিষয়গুলি নিয়ে অধ্যক্ষ মানসিক চাপে ছিলেন বলেই দাবি স্বাস্থ্য শিবিরের একাংশের। অভিযোগ, নিজের পছন্দের সিনিয়র রেসিডেন্ট চিকিৎসক নিয়োগ এবং তৃণমূলপন্থী এক শিক্ষক চিকিৎসককে মেডিক্যাল কলেজ থেকে বদলির জন্যও অধ্যক্ষের উপরে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান চাপ তৈরি করছিলেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে নির্মল বলেন, ‘‘মিথ্যা বদনাম করার উদ্দেশ্য থাকলে অনেকেই অনেক কিছু বলতে পারেন। কিন্তু মঞ্জুদেবীর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ বা মতানৈক্য কখনই ছিল না। উনি গত বছর থেকেই অসুস্থ। তাই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ নির্মলের আরও দাবি, ‘‘বক্ষ রোগ এবং এজরা বিল্ডিং ভেঙে সেখানে ট্রমা সেন্টার করার প্রস্তাব আমি দিয়েছিলাম। কিন্তু আরআইও ভাঙার পরিকল্পনা তো মঞ্জুদেবীরই। অবশ্য তা নিয়ে কোনও মতানৈক্য হয়নি।’’
সূত্রের খবর, মঞ্জুদেবীর জায়গায় যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কামারহাটি সাগরদত্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ তথা নির্মল-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত চিকিৎসক রঘুনাথ মিশ্রের। অন্য দিকে কলকাতা মেডিক্যালের সুপার মানব নন্দীর জায়গায় আসছেন অ্যানাস্থেশিয়া বিভাগের সব্যসাচী দাস। মানববাবু ডিন হচ্ছেন।