ট্যাংরা-কাণ্ডে ধৃত প্রসূন দে। —ফাইল চিত্র।
নিজের পক্ষে কোনও আইনজীবী রাখতে চান না বলে আদালতে আগেই জানিয়েছিলেন ট্যাংরা-কাণ্ডে ধৃত প্রসূন দে। বৃহস্পতিবার আদালতে বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সমস্ত অপরাধ স্বীকার করে নিতে চান বলে জানালেন।
পুলিশি হেফাজতে থাকা প্রসূনকে এ দিন শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্টে পেশ করা হয়। পুলিশি হেফাজত শেষে এ দিন দুপুর পৌনে ২টো নাগাদ প্রসূনকে আদালতে নিয়ে আসা হয়। তাঁর পরনে ছিল সাদা গেঞ্জি, নীল ট্র্যাকসুট। মুখ ছিল মাস্কে ঢাকা। হাতে জলের বোতল। শুনানিতে বিচারকের সামনে দাঁড়িয়ে প্রসূন এ দিন জানান, তিনি নিজের দোষ স্বীকার করতে চান। বিচারক দে পরিবারের এই সদস্যকে জেলে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে দু’-এক দিন ভেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রসঙ্গত, এ দিন প্রসূনকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত।
এর আগের শুনানিতে আদালতে বিচারকের সঙ্গে কথোপকথনে প্রসূন জানিয়েছিলেন, তিনি আইনজীবী রাখতে চান না। তাঁর কিছু বলারও নেই। আইনি সহায়তার আইনজীবী কবিতা সরকার জানিয়েছিলেন, প্রসূন আর বাঁচতে চান না। তিনি আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করে নেবেন। এ দিন বিচারক অরিজিৎ মণ্ডলকে নিজেই দোষ স্বীকার করে নেওয়ার কথা জানালেন প্রসূন।
এ দিন শিয়ালদহের মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি স্নেহাংশু ঘোষ আদালতে জানান, প্রসূন ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তি দিতে চান। এর পরেই এজলাসে হাজির করা হয় প্রসূনকে। বিচারকের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে তাঁর মুখে মাস্ক ছিল না। এ দিনও প্রসূন জানান, তাঁর কোনও আইনজীবী নেই। তিনি আইনজীবী রাখতেও চান না।
বিচারক প্রসূনকে বলেন, ‘‘নিজের ইচ্ছায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে দোষ স্বীকার করবেন তো?’’
প্রসূন বলেন, ‘‘হ্যাঁ।’’ আদালত সূত্রের খবর, প্রসূনের বক্তব্য লিপিবদ্ধ করেছে পুলিশ। বিচারক জানতে চান, এখানে যা লেখা আছে, তা প্রসূন নিজের ইচ্ছায় লিখেছেন কিনা? দে বাড়ির সদস্য এই প্রশ্নেও নিজের উত্তরে বলেন, হ্যাঁ। বিচারক প্রশ্ন করেন,
‘‘পুলিশি হেফাজতে আপনার কোনও অসুবিধা হয়নি তো?’’ এ বার প্রসূন উত্তর দেন, ‘‘না।’’ বিচারক বলেন, ‘‘পুলিশ আপনাকে জেল হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানিয়েছে। আপনাকে জেলে থাকতে হবে। আপনার কিছু বলার আছে?’’ প্রসূন বলেন, ‘‘না। আমি দোষ স্বীকার করব।’’ বিচারক তাঁকে বলেন, ‘‘আজকেই দোষ স্বীকার করতে পারবেন না। এই ভাবে দোষ স্বীকার করা যায় না। এটার একটি পদ্ধতি আছে। ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে এটা করতে হয়। এটা এক দিনের ব্যাপার নয়। আপনি জেলে গিয়ে দু’-এক দিন ভাবুন।’’
এর পরেই এজলাস থেকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রসূনকে। এজলাস ছাড়ার আগে বিচারককে দু’হাত তুলে নমস্কার করেন প্রসূন। শুভেন্দু জানান, ১০ মার্চ প্রসূনের স্বীকারোক্তি রেকর্ড করার দিন ধার্য করেছে আদালত। এ দিন বিচারক কবিতার কাছে জানতে চান, তিনি প্রসূনের সঙ্গে দেখা করেছেন কিনা। কবিতা জানান, এ দিন তিনি দেখা করেননি। কারণ আগের দিনই প্রসূন জানিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আইনজীবী রাখতে চান না।
এ দিকে, ট্যাংরা-কাণ্ডের পর থেকে এখনও এন আর এসেই ভর্তি প্রণয় দে এবং তাঁর কিশোর ছেলে। পরিজনেরা কিশোর ছেলের দায়িত্ব নিতে চাইলে কী হবে, সেই প্রশ্নেও এখনও স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছননি তদন্তকারীরা।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে