খন্দপথ: গর্তে ভরা সল্টলেকের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তা। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
রাস্তা জুড়ে বড় বড় গর্ত। কোথাও আবার রাস্তার একাংশের পিচের প্রলেপ উঠে গিয়েছে। রাস্তার অবস্থা এতটাই বেহাল যে, বিপদ এড়াতে অতিরিক্ত জ্বালানি পুড়িয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে যাচ্ছেন গাড়িচালকেরা। স্থানীয়েরা বলছেন, যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা হতে পারে। কিন্তু অভিযোগ, সব জেনেও সে দিকে নজর নেই পুর প্রশাসনের।
সল্টলেকের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কয়েকটি রাস্তার বেহাল অবস্থা নিয়ে এমন অভিযোগ করছেন স্থানীয়েরা। তিন নম্বর সেক্টরে ১৩ নম্বর ট্যাঙ্ক লাগোয়া একটি রাস্তা গিয়েছে অনিন্দিতা বাস স্টপের দিকে। বেশ কয়েক মাস ধরে সেই রাস্তার হাল খারাপ। স্থানীয় আইএ ব্লকের বাসিন্দা অর্চক ভাদুড়ীর কথায়, ‘‘চাইলেও সব সময়ে এড়িয়ে যাওয়া যায় না। আমার মাসির বাড়ি যেতে গেলে ওই রাস্তা দিয়েই যেতে হয়। তবে ওটাকে রাস্তা না বললে খাটাল বলা ভাল। অথচ ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তার অবস্থা বেশ ভাল।’’
বেহাল রাস্তা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেন স্থানীয় রিকশা এবং অটোচালকেরাও। স্থানীয় গাড়িচালকেরাও সোজা রাস্তা এড়িয়ে কিছুটা ঘুরে যাচ্ছেন। এইচএ ব্লকের বাসিন্দা, আইনজীবী সৌম্যজিৎ রাহার কথায়, ‘‘রাস্তার অবস্থা এতই খারাপ যে কোনও সময়ে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওই রাস্তা দিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সে বা গাড়িতে কোনও রোগীকে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁর কী অবস্থা হয় ভেবে দেখুন।’’ ওই রাস্তার দু’দিকের অবস্থাই তথৈবচ। তবে কোনও কোনও অংশের অবস্থা তুলনায় ভাল। সৌম্যজিৎ বলেন, ‘‘রাস্তার ওই ভাল অংশটুকু দেখে অনেকেই উল্টো দিক দিয়ে গাড়ি বা অটো নিয়ে ঢুকে আসছেন। এতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা আরও বাড়ছে।’’
ভারতী বিদ্যাভবন স্কুলের দিক থেকে যে রাস্তাটি ১৩ নম্বর ট্যাঙ্কের দিকে আসছে, তারও দশা শোচনীয়। কয়েক মাস আগে কোনও কারণে ওই রাস্তার ফুটপাতের একাংশে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছিল। পরে তার উপরে ইট দেওয়া হলেও তাতে পিচের প্রলেপ পড়েনি। ফলে রাস্তার একাংশে পিচ থাকলেও অন্য অংশে ইট বেরিয়ে রয়েছে।
আইএ ব্লকের বাসিন্দা অমিত হালদারের অভিযোগ, ‘‘আমার ওই রাস্তা এড়িয়ে চলার উপায় নেই। আমার মেয়েরা বিদ্যাভবন স্কুলে পড়ে। তাদের গাড়িতে দিয়ে আসতে হয়। কী ভাবে এত দিন ধরে একটি রাস্তা খারাপ হয়ে পড়ে থাকে!’’ পূর্বাচলের বাসিন্দা সঞ্জীব ঘোষের কথায়, ‘‘এই রাস্তাতে যে কোনও দিন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ১৩ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে আইএ মার্কেটে প্রায়শই যাতায়াত করতে হয়। এই রাস্তা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।’’
যে ওয়ার্ডের রাস্তার এমন অবস্থা, তার তৃণমূল কাউন্সিলর নীলাঞ্জনা মান্না অবশ্য বলছেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে ওই রাস্তা সারানোর জন্য পুর প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। এত দিনে তার টেন্ডার করা হয়েছে।’’ বিধাননগর পুরসভার মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি ওই রাস্তাগুলি সারিয়ে দেওয়া হবে।’’