কঙ্কাল-কাণ্ডের তদন্তে নেমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সূত্র হাতে এলেও এখনও কার্যত অন্ধকারেই বিধাননগর পুলিশ।
সোমবার সল্টলেকের ডি ডি ব্লকে অফিসপাড়ায় একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির দশতলা ছাদের উপরে জলের ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছিল কঙ্কালের বিভিন্ন অংশ। ওই রাতেই একটি খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর পুলিশ। ইতিমধ্যে কঙ্কালটিও ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সেখানকার চিকিৎসকদের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে কথা হয়েছে তদন্তকারীদের। সেখান থেকেও কিছু সূত্র মিলেছে বলে জানায় পুলিশ। পাশাপাশি, নির্মীয়মাণ বাড়ির ঠিকাদার সংস্থার প্রতিনিধিদের কাছ থেকেও বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
তবে তদন্তকারীদের একাংশের বক্তব্য, জলের ট্যাঙ্কের মধ্যে যে ভাবে ভারী কিছু দিয়ে কঙ্কালটি রাখা হয়েছিল, তাতে স্পষ্ট যে বিষয়টি পূর্ব পরিকল্পিত। রহস্য তৈরি হয়েছে সেখানেই। কেউ সেখানে এসে কঙ্কালটি ফেলেছে কি না, বা ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল থেকে যে নমুনা মিলেছে, তাতে প্রাথমিক ভাবে কঙ্কালটি কোনও মহিলার বলেই ধারণা হয়েছিল পুলিশের। এক পুলিশ কর্তা অবশ্য জানান, ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই সব জানা যাবে। তবে কঙ্কালটি বেশ পুরনো বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। সেই মতো বিধাননগর কমিশনারেটের বিভিন্ন থানায় নিরুদ্দেশ হওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।
এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের কথায়, সল্টলেকে অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে বহু বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েও পরে বন্ধ হয়ে যায়। অনেক বছর বাদে ফের কাজ শুরু হয়। কিন্তু সেখানে নজরদারি থাকে না। ফলে কঙ্কাল ফেলে গেলেও কারও চোখে পড়ার কথা নয়। অন্য যে কোনও ধরনের অপরাধও সেখানে হতে পারে। এ ধরনের নির্মীয়মাণ বাড়িগুলিতে নজরদারির ক্ষেত্রে পুরসভা বা পুলিশ
আরও কড়া পদক্ষেপ নিক বলে দাবি বাসিন্দাদের।
পুর-প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, এ ভাবে নজরদারি রাখা মুশকিল। তবে স্মার্ট গভর্নেন্স প্রকল্পের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা রয়েছে। বিধাননগরের পুলিশ কর্তাদের একাংশ জানান, মোবাইল টহল-সহ সাধারণ নজরদারি থাকে। তবে নির্মীয়মাণ বাড়ি বা অফিসের ক্ষেত্রে নিজেদের সুরক্ষার স্বার্থেই কেয়ারটেকার কিংবা ঠিকাদারের প্রতিনিধি থাকা প্রয়োজন। কোথাও কোথাও সেই নজরদারিতে ফাঁক থাকে।
বিধাননগরের গোয়েন্দা প্রধান কঙ্কর প্রসাদ বারুই মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে কঙ্কাল সম্পর্কে বিশদে তথ্য মিলবে। খুনের মামলা শুরু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, কিছু দিনের মধ্যেই সব স্পষ্ট হবে।’’