প্রতীকী ছবি।
শিয়ালদহ স্টেশনে হাতবদল হতে চলেছে হাতির দাঁত। গোপন সূ্ত্রে এই খবর পেয়ে স্টেশন চত্বরে গত রবিবার হানা দেন ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের (ডিআরআই) কর্তারা। উদ্ধার হয় কোটি টাকারও বেশি মূল্যের হাতির দাঁত। সেই সঙ্গে শহরের একটি ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে উদ্ধার হয়েছে বাঘের পাঁচটি দাঁতও। গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলা-সহ মোট তিন জনকে।
তদন্তকারীদের দাবি, কলকাতা থেকে একটি পাচার চক্র পশু-পাখির দেহাংশ বিদেশে পাচার করছিল। সেই চক্রের পান্ডা হাবিবুল্লাকে বহু দিন ধরেই খুঁজছিল ডিআরআই। তাকে শিয়ালদহ থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ধরা হয় হাবিবুল্লার দ্বিতীয় স্ত্রী মুসলিমা বেগম ও জামাই আদিল হুসেনকেও। মঙ্গলবার তিন জনকে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হলে জেল হেফাজতের নির্দেশ হয়।
ডিআরআই জানায়, গত রবিবার স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, অসম থেকে ট্রেনে করে এসে প্রায় সওয়া চার কেজি ওজনের হাতির দাঁত হাবিবুল্লার হাতে তুলে দিচ্ছে মুসলিমা। ব্যাগের লুকনো কুঠুরিতে হাতির দাঁত আনা হয়েছিল। এর পরেই ধরা হয় স্বামী-স্ত্রীকে।
ধৃত ওই দম্পতিকে জেরা করে আদিলের কথা জানতে পারে ডিআরআই। পার্ক সার্কাসে আদিলের ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে হাতির দাঁত ও দাঁত দিয়ে তৈরি বহু সামগ্রী মেলে। ডিআরআই সূত্রের খবর, কড়েয়া রোডে হাবিবুল্লার ফ্ল্যাটে হানা দিয়ে উদ্ধার করা হয় বাঘের পাঁচটি দাঁত, ২৯টি হাতির দাঁত, দাঁতের জিনিস তৈরির প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং নগদ এক লক্ষ ৪৮ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ধৃতদের থেকে হাতির দাঁত ও দাঁতের তৈরি মোট ১২ কেজি ওজনের সামগ্রী এবং পাঁচটি বাঘের দাঁত উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারদর এক কোটি ১৪ লক্ষ টাকারও বেশি।
গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, হাতির দাঁত এবং দাঁতের তৈরি সামগ্রী মূলত বাংলাদেশ ও নেপালে পাচার করত হাবিবুল্লা। বাঘের দাঁত পাঠানো হত চিন ও মায়ানমারে। ডিআরআই জানায়, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে পশু-পাখির দেহাংশ বিদেশে পাচার করার অভিযোগে শিলিগুড়ি এবং গুয়াহাটিতে মামলাও করা হয়েছে হাবিবুল্লার বিরুদ্ধে। গোয়েন্দাদের দাবি, কয়েক মাসের মধ্যে প্রায় ছ’কোটি টাকা দামের হাতির দাঁত ও তা দিয়ে তৈরি জিনিস পাচার করে হাবিবুল্লা। ওই সময়ে তার কয়েক জন সঙ্গী ধরা পড়লেও হাবিবুল্লার হদিস পাওয়া যায়নি।