প্রতীকী ছবি।
এটিএম জালিয়াতিতে এবার পুলিশের জালে ধরা পড়ল ব্যাঙ্কেরই এক জন প্রাক্তন চুক্তিভিত্তিক কর্মী।
এ মাসের ২০ তারিখ রোহিত কুমার সিংহ, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সায়েন্স সিটি শাখার ম্যানেজার প্রগতি ময়দান থানায় এটিএম জালিয়াতির অভিযোগ জানান। তিনি পুলিশকে জানান, তাঁদের সায়েন্স সিটির কাছে জেবিএস হ্যালডেন অ্যাভিনিউয়ের একটি এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন দু’জন গ্রাহক।
তাঁর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী নভেম্বর মাসে দুই গ্রাহকের এক জন ১০০০০ টাকা এবং অন্য এক গ্রাহক ৪০০০০ টাকা প্রতারিত হয়েছেন। তাঁরা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছেন, তাঁরা টাকা তুলতে গিয়েছিলেন ওই এটিএমে। কিন্ত এটিএম কাজ করছিল না। কিন্তু তাঁরা ওই এটিএম থেকে বেরিয়ে যাওয়ার খানিক পরেই তাঁদের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠে গিয়েছে।
প্রগতি ময়দান থানার পুলিশ তদন্তে নেমে প্রথমেই এটিএমের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন। সেখান থেকে দেখা যায়, ওই দুই প্রতারিত ব্যক্তি এটিএম থেকে বেরনোর পরই এক যুবক এটিএমে ঢোকে। দু’জনের ক্ষেত্রেই একই যুবক। সেটা দেখেই পুলিশের সন্দেহ হয়। তারা ওই এটিএমের আশপাশে ফাঁদ পাতে।
আরও পড়ুন- এটিএম জালিয়াতিতে নতুন করে সক্রিয় ‘গয়া গ্যাং’
আরও পড়ুন- প্রবীণদের সাহায্য করার নামে এটিএম জালিয়াতি কলকাতায়! গয়ায় ধৃত ২
আর সেই ফাঁদেই পা দেয় ওই যুবক। সে ফের ওই এটিএমের কাছে এলে পুলিশ তাকে পাকড়াও করে। ধৃত সুজন খাঁড়া হাওড়ার বাঁকড়ার বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে খবর, জেরাতে সে জানায় যে, মাস কয়েক আগে ওই ব্যাঙ্কেই সে চুক্তি ভিত্তিক কর্মী হিসাবে কাজ করেছে। সেখানে কাজ করার সময়তেই এটিএমের কিছু কারসাজি সে শেখে। এটিএমের একটি নির্দিষ্ট বোতাম টিপে রাখলে এটিএম কিছু সময় ধরে হ্যাং হয়ে থাকে। এটিএমের স্ক্রিনে কিছু দেখা যায় না। অথচ যে কার্ড এটিএমে ঢোকানো হচ্ছে তার লেনদেন শেষ হচ্ছে না। গ্রাহক মেশিন খারাপ ভেবে বেরিয়ে গেলেও ওই কার্ডের তথ্য সক্রিয় থাকছে মেশিনে। এর পরই সুজন এটিএমে ঢুকে নির্দিষ্ট বোতাম টিপে স্বাভাবিক করত এটিএমের স্ক্রিন। তার পরই সক্রিয় থাকা কার্ডের তথ্য ব্যবহার করে টাকা তুলে নিত। তদন্তকারীরা বলেন, এই কায়দায় এক সময় দেশ জুড়ে প্রতারণা চালাত কুখ্যাত গয়া গ্যাং। ধৃতের কাছ থেকে পাঁচটি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ড উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করা হচ্ছে জানার জন্য আর কেউ ওই চক্রে আছে কি না।