এখানেই পড়েছিল যুবকের দেহ। নিজস্ব চিত্র।।
চোর নন। তিনি পেশায় স্থপতি। রবিবার ভোরে গল্ফ গ্রিনের ‘বি’ ব্লকে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের পাশের রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিল তাঁর দেহ। সারা দিন কেউ তাঁকে শনাক্ত করতে পারেননি। স্থানীয় বাসিন্দা এবং পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ছিল ওই যুবক চোর। নির্মীয়মাণ বহুতলে চুরি করতে ঢুকে নীচে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সোমবার সংবাদমাধ্যমে ওই খবর পড়ে যুবকের পরিচিতেরা পুলিশ মর্গে গিয়ে তাঁর দেহ শনাক্ত করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সন্তোষ সিংহঅধিকারী (২৭)। তাঁর বাড়ি অসমের যোরহাটে। তিনি পেশায় স্থপতি। গোয়া থেকে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। তবে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন ওই যুবক মাদকাসক্ত ছিলেন। সেই কারণে দিল্লিতে একটি নেশামুক্তি কেন্দ্রেও তিনি বেশ কিছু দিন ভর্তি ছিলেন। পরে তিনি গোয়ায় চাকরিও করতেন। সম্প্রতি গোয়ায় একটি ফৌজদারি মামলায় জড়িয়ে পড়ায় তিনি মাস দেড়েক আগে গোয়া থেকে কলকাতায় আসেন। যাদবপুরের নিউ বিক্রমগড়ের একটি মেসে থাকছিলেন সন্তোষ। সোমবার ওই মেসেরই কয়েক জন সন্তোষের দেহ শনাক্ত করেন।
মেসের এক আবাসিক শৈলজানন্দ মিশ্র বলেন, ‘‘রবিবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, দরজা খোলা। সন্তোষের মোবাইল পড়ে রয়েছে। অন্যান্য জিনিসপত্রও মেসে ছিল। ভেবেছিলাম, হয়তো কোথাও ঘুরতে বেরিয়েছে।’’
তিনি জানান, রবিবার রাত পর্যন্ত সন্তোষ না ফেরায় মেসের সকলে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। সোমবার সংবাদমাধ্যমে তাঁরা ওই অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের খবর জেনে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার পরেই তাঁরা বুঝতে পারেন সন্তোষ বেঁচে নেই। শৈলজানন্দ জানান, সন্তোষ খুব কম কথা বলতেন। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে সোমবার রাতেই কলকাতায় এসে পৌঁছন তাঁর বাড়ির লোকজন। পুলিশের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে নেশাগ্রস্ত থাকায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন সন্তোষ। সেই কারণে গল্ফ গ্রিনের ওই নির্মীয়মাণ আবাসনের পাঁচতলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে পুলিশ মনে করছে।