বড় রাস্তা থেকে অলিগলি দিয়ে গাড়ি নিয়ে পালাচ্ছে চোর। পিছনে পুলিশের গাড়িতে ধাওয়া করেছেন মোটাসোটা চেহারার এক ইনস্পেক্টর। ছুটতে ছুটতে শেষে পাকড়ে ফেললেন চোরকে। হাঁফাতে হাঁফাতে সঙ্গী কনস্টেবলদের বললেন, ‘‘ডাল দো গাড়ি মে!’’
বৃহস্পতিবার ভরদুপুরে এমনই দৃশ্যের সাক্ষী হল হাজরা এলাকা।
এ দিন দুপুরে লালবাবু ওরফে লালু নামে এক দাগি গাড়িচোরকে ট্যাক্সি চালিয়ে ঘুরতে দেখে সন্দেহ জেগেছিল কালীঘাট থানার ওসি মহাদেব চক্রবর্তীর। সদলবলে ট্যাক্সির পিছনে ধাওয়া করতেই পালাতে শুরু করে সে। পিছু পিছু ছুটতে থাকে পুলিশের গাড়িও। বেশ কিছুক্ষণ এ দিক-সে দিক পালানোর পরে দেশবন্ধু গার্লস কলেজের সামনে ট্যাক্সি-সহ ওই গাড়িচোরকে পাকড়াও করা হয়। ধৃত লালু ভবানীপুরের চক্রবেড়িয়া রোডের বাসিন্দা।
পুলিশ জানিয়েছে, এই গাড়িচোর লালুর চোটে অতিষ্ঠ ছিলেন বিভিন্ন থানা এবং লালবাজারের মোটরচুরি শাখার গোয়েন্দারা। গত নভেম্বরেই লালুকে পাকড়াও করেছিল কালীঘাট থানা। সে বার সার্ভে পার্ক এলাকার একটি ট্যাক্সি চুরি করে পালাচ্ছিল সে। সেই ঘটনায় সম্প্রতি জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়েছে সে। তার পর থেকেই একটু সজাগ ছিল পুলিশ। সম্প্রতি গড়িয়াহাট এলাকা থেকে একটি ট্যাক্সি চুরি হওয়ার পরেই লালুর উপরে নজরদারি করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ক’দিন ধরেই সে বেপাত্তা ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। লালবাজার সূত্রে খবর, এ দিন দুপুরে এলাকায় টহল দেওয়ার সময়ে কালীঘাট থানার অফিসারদের নজরে পড়ে সে ও তার পরেই শুরু হয় ওই চোর-পুলিশ খেলা। পুলিশের দাবি, এ দিন উদ্ধার হওয়া ট্যাক্সিটি গড়িয়াহাট এলাকারই।
পুলিশ সূত্রের খবর, লালু গাড়ির লক ভাঙায় ওস্তাদ। এ ভাবেই ট্যাক্সি-সহ নানা গাড়ি চুরি করে সে। গাড়ি চুরি করার পরে প্রথমেই সেটির নম্বর বদলে একটি নকল নম্বর-প্লেট লাগায়। তার পরে সেটি চালিয়ে ঘুরে বেড়ায় এবং তার ফাঁকেই বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করতে থাকে। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে চোরাই যন্ত্রাংশের ব্যবসায়ী
এবং লোহালক্কড়ের কারবারিদেরই সে এই সব বিক্রি করে বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ।