নোটের আকালের বাজারে একই রাতে পর পর দু’টি এটিএম ভেঙে টাকা লুঠের ঘটনায় নড়ে বসেছিল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গিয়েছিল, রাতে নিয়মিত টহলদারি চললেও তা যথেষ্ট নয়। শনিবার গভীর রাতে ওই ঘটনার পরে সোমবার দক্ষিণ শহরতলির প্রতিটি থানা পরস্পরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে এলাকায় টহলদারি শুরু করে। আর তাতেই মেলে সাফল্য। একটি এটিএম থেকে পুলিশ হাতেনাতে গ্রেফতার করে দুই দুষ্কৃতীকে। তাদের নাম শিবশঙ্কর রাজভড় ও পাপ্পু হালদার। পুলিশের দাবি, জেরায় ওই দুই দুষ্কৃতী একটি এটিএম ভাঙার কথা স্বীকার করেছে। মঙ্গলবার ধৃতদের আদালতে হাজির করা হলে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জেনেছে, শনিবার পর্ণশ্রীর বনমালী নস্কর রোডে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি এটিএম ভেঙে ১১ হাজার ৮০০ টাকা লুঠ শিবশঙ্কর ও পাপ্পুর কাজ। এর আগে তারা যাদবপুর, রিজেন্ট পার্ক এলাকারও কয়েকটি এটিএম ভেঙে টাকা লুঠ করেছিল বলে পুলিশের দাবি।
সোমবার রাত তখন তিনটে। টহলদার পুলিশের নজরে পড়ে, বেহালার রায়বাহাদুর রোডে এসবিআইয়ের একটি এটিএমের শাটার অর্ধেক নামানো। কাছে যেতেই পুলিশের চোখে পড়ে, এটিএম বুথে ঢুকে স্ক্রু-ড্রাইভার, প্লাস, রেঞ্জ দিয়ে এটিএম ভাঙার চেষ্টা করছে এক জন। তৎক্ষণাৎ তাকে পুলিশ পাকড়াও করে। জানা যায়, সে-ই শিবশঙ্কর। জেরায় সে জানায়, কাছেই ট্যাক্সি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে আর এক জন। টাকা লুঠ করে ওই ট্যাক্সিতে পালানোর ছক ছিল দু’জনের। পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয় জন অর্থাৎ পাপ্পুকেও ধরে ফেলে।
তবে এই দু’জনকে ধরার পরেও পুলিশের দুশ্চিন্তা যাচ্ছে না। কারণ, শনিবার গভীর রাতে টালিগঞ্জের রসা রোড (ইস্ট) সেকেন্ড লেনে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার একটি এটিএম-ও ভাঙা হয়েছিল এবং সেখান থেকে ৭০০ টাকা খোয়া যায়। কারণ, দুষ্কৃতীরা ভল্ট পর্যন্ত পৌঁছতে পারেনি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করেছিল, দু’টি এটিএমে একই দুষ্কৃতী দল হানা দিয়েছে। কিন্তু শিবশঙ্কর আর পাপ্পু ধরা পড়ার পরে তারা জেনেছে, টালিগঞ্জের ঘটনা অন্য কোনও দলের কাজ। অর্থাৎ একই রাতে এটিএম লুঠের জন্য দু’টি দল বেরিয়েছিল। যাদের একটি ধরা পড়লেও অন্যটি এখনও অধরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সোমবার তড়িঘড়ি বৈঠক ডেকে কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ-পশ্চিম বা বেহালা ডিভিশনের ডিসি মিরাজ খালিদ সব ক’টি থানাকে মিলেমিশে এটিএমগুলির উপরে নজর রাখতে নির্দেশ দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, তিনি জানান, শুধু নিজের এলাকায় নয়, পার্শ্ববর্তী থানা এলাকাতেও টহল দিতে হবে। যাতে কোনও এটিএম নজরদারির বাইরে না থাকে।