ব্লকের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে চিৎকার করে গালিগালাজ করছিল তিন যুবক। গাড়িতে ঠুকে ভাঙছিল মদের বোতল। সাইকেল আরোহীকে থামিয়ে পেটাচ্ছিল। এমনকি, প্রাতর্ভ্রমণকারীদের উত্ত্যক্তও করছিল। শনিবার সাতসকালে এমন দৃশ্য দেখে আতঙ্ক ছড়ায় সল্টলেকের জিডি ব্লকে। শেষে এক বাসিন্দার তৎপরতায় খবর পেয়ে সকালেই পুলিশ তিন যুবককে গ্রেফতার করে। ধৃতদের নাম সৃজন বৈরাগী, সায়ন সামন্ত এবং দীপক মুখোপাধ্যায়। সৃজন জিডি ব্লকেই থাকে। সায়নের বাড়ি বহরমপুরে ও দীপকের বাড়ি বড়তলা থানা এলাকায়। সরকারি আইনজীবী সাবির আলি জানিয়েছেন, ধৃতেরা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছে।
এ দিন ডোমা ওয়াং নামে ওই ব্লকের বাসিন্দা এক মহিলা তিন যুবকের উপদ্রবের দৃশ্য ফোনে ভিডিয়ো করে ফেসবুকে দেন। ভিডিয়োটিতে ট্যাগ করা হয় বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার সুপ্রতিম সরকারকেও। এ দিন বিকেলে কমিশনারেট থেকে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার ওসি অর্ঘ্য মুখোপাধ্যায়কে ওই বাসিন্দার বাড়িতে কথা বলতে পাঠানো হয়।
উঠতি যুবকদের এমন উপদ্রব সল্টলেকে অবশ্য নতুন নয়। তবে বহু ক্ষেত্রেই নাগরিকেরা প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেন না। পুলিশ জানাচ্ছে, তিন যুবক গ্রেফতার হওয়ার পরেও ডোমা কয়েক জনকে নিয়ে থানায় গিয়ে এফআইআর করেন। ডোমার দাবি, ‘‘ছেলেগুলি মত্ত তো ছিলই, কোনও মাদকের নেশাও করেছিল বলে ধারণা। একের পর এক মদের বোতল গাড়িগুলির উপরে ভাঙছিল ওরা। ফলে একাধিক গাড়ির ক্ষতি হয়।’’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাস্তায় কাচ ছড়িয়ে যাওয়ায় প্রতিবাদ করেন মেয়েদের হস্টেলের এক নিরাপত্তাকর্মী। তিনি সাইকেলে চেপে আসছিলেন। তাঁকে সাইকেল থেকে নামিয়ে মারধর করা হয়। ডোমা সেই দৃশ্য ভিডিয়ো করে ফেসবুকে পোস্ট করতেই তা ভাইরাল হয়।
শহরের বেশ কয়েকটি রেস্তরাঁর মালিক ডোমার উদ্যোগেই এক যুবকের মাধ্যমে খবর দেওয়া হয় পুলিশে। সূত্রের খবর, ডোমা আদতে কার্শিয়াঙের বাসিন্দা। তাঁর স্বামী আমেরিকায় পুলিশে কর্মরত। বরাবরই সাহসী ডোমা। পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি যখন পাহাড়ে ওঠে, তখন তিনি প্রকাশ্যেই বিরোধিতা করেছিলেন।