ফাইল চিত্র।
কাজের শেষে সল্টলেকে ফিরতে হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা হলুদ ট্যাক্সির কাছে গিয়েছিলেন এক চিকিৎসক। চালক জানালেন, ভাড়া গুনতে হবে ৮০০ টাকা! উত্তর কলকাতার এক হাসপাতালের সামনে থেকে টালিগঞ্জ যাওয়ার ট্যাক্সি ধরতে গিয়ে রোগীর পরিবারকে শুনতে হয়, ‘ও দিকে যাব না’। একই কথা বলে পরপর বেরিয়ে যায় তিনটি ট্যাক্সি।
অতিমারি পরিস্থিতিতে ব্যবসা কমলেও ট্যাক্সিচালকদের যাত্রী-প্রত্যাখ্যানে বিরাম নেই বলেই অভিযোগ উঠেছে। আর তাই ফের হলুদ ট্যাক্সির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযানে নেমেছে লালবাজার। সূত্রের খবর, গত সপ্তাহ থেকে হাসপাতাল-সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে লালবাজারের ট্র্যাফিক পুলিশের বিশেষ তল্লাশি বাহিনী। লালবাজার জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে ১২০ জন ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে যাত্রী-প্রত্যাখ্যান বা অতিরিক্ত ভাড়া চাওয়ায় মামলা রুজু করা হয়েছে বা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রের খবর, ট্র্যাফিক-কর্তারা বাহিনীকে হাসপাতাল চত্বরে এবং বাইরে চালকদের এই প্রবণতার দিকে বিশেষ ভাবে নজর রাখতে বলেছেন, যাতে রোগীর পরিজনদের ভোগান্তি কমে। তাই গত কয়েক দিন ধরে রাতের দিকে বড় বড় হাসপাতালের সামনে অভিযান চালাচ্ছে ওই বাহিনী। আগামী দিনে ট্যাক্সিচালকদের জোরজুলুমের বিরুদ্ধে ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকেও নামানো হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, হলুদ ট্যাক্সির চালকদের যাত্রী-প্রত্যাখ্যান দেখা যায় শহরের সর্বত্রই। সেই সঙ্গে রয়েছে মিটারের চেয়ে বেশি দর হাঁকার প্রবণতা, রাতের দিকে যা কার্যত তোলাবাজি হয়ে দাঁড়ায়। এই জুলুম রুখতেই ওই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, পুলিশের সোশ্যাল মিডিয়া পেজে অভিযোগ জানালেও অভিযুক্ত ট্যাক্সিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, ২০১৪ সালে ট্যাক্সিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছিল লালবাজার। সে সময়ে যাত্রী-প্রত্যাখ্যান করলে মোটা টাকা জরিমানা করা হত। তাতে সাফল্যও এসেছিল। কিন্তু পরে প্রশাসনের শীর্ষ মহলের চাপে সেই অভিযান বন্ধ হয়ে গেলে ফের পরিস্থিতি যে কে সে-ই হয়ে দাঁড়ায়। সম্প্রতি হলুদ ট্যাক্সিচালকদের মতো অ্যাপ-ক্যাব চালকদের মধ্যেও যাত্রী-প্রত্যাখ্যানের প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। তার বিরুদ্ধেও অভিযান চলছে।
পুলিশের দাবি, যাত্রী-প্রত্যাখানের জেরে শহরের রাস্তায় গত কয়েক বছরে হলুদ ট্যাক্সির সংখ্যা অর্ধেকে এসে দাঁড়িয়েছে। তবু ‘রোগ’ সারেনি। তাই বাধ্য হয়ে ফের পুলিশকেই ব্যবস্থা নিতে আসরে নামতে হচ্ছে।