Mosquito

Mosquito Borne Disease: মশাবাহিত রোগে শিশুদের সংক্রমণ বৃদ্ধিতে চিন্তায় চিকিৎসকেরা

ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা অতিমারির তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা এখনও কাটেনি। তার মধ্যেই চোখ রাঙাতে শুরু করেছে ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া। সেই জোড়া ফলায় শহর থেকে জেলায় শিশু আক্রান্তদের সংখ্যা কম নয় বলেই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। বরং যে হারে শিশু রোগী বাড়ছে, তাতে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাঁদের কপালেও।

Advertisement

ইতিমধ্যেই শহরের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সূত্রের খবর, পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট অব চাইল্ড হেলথ-এ এখনও পর্যন্ত ৭-৮ জন শিশু ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে। আবার বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতালে প্রতিদিন ১০-১২ জন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত শিশু ভর্তি হচ্ছে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ দিলীপকুমার পাল বলেন, ‘‘রোগীর সংখ্যা বাড়লেও বেশির ভাগ শিশুকেই সুস্থ করে বাড়ি পাঠাতে পারছি। তবে দু’-এক জন এতটাই সঙ্কটজনক অবস্থায় এসেছিল যে কিছু করা সম্ভব হয়নি।’’ চিকিৎসকেরা স্পষ্ট জানাচ্ছেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে। দেখা যাচ্ছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে ডেঙ্গি আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা কিছুটা হলেও বেশি।

চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আগে জুন থেকে শুরু হয়ে দুর্গাপুজো পর্যন্ত চলত ডেঙ্গির প্রকোপ। কিন্তু শেষ দু’-তিন বছরে সেই পরিস্থিতির বদল হয়েছে। অক্টোবর থেকে শুরু হয়ে প্রায় ডিসেম্বর অর্থাৎ শীতেও ডেঙ্গির প্রকোপ চলছে। এর নেপথ্যে আবহাওয়ার পরিবর্তন অর্থাৎ নিম্নচাপের কারণে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি এবং বিভিন্ন জায়গায় জল জমে থাকাই কারণ। চিকিৎসক ও পতঙ্গবিদদের একাংশ জানাচ্ছেন, বৃষ্টির পরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় দু’-তিন দিন ধরে জল জমে থাকছে। সেই জলে জন্মাচ্ছে ডেঙ্গির মশা। সম্প্রতি ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কলকাতা পুরসভা ও অন্যান্য পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে রাজ্য নগরোন্নয়ন সংস্থা। তাতে পুরসভাগুলির বিভিন্ন খামতির কথাও উঠে আসে।

Advertisement

ডিসেম্বরের শুরুতে ঠান্ডার আমেজের মধ্যেই ফের নিম্নচাপের ভ্রুকুটি তৈরি হয়েছে। তাতে আবার ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেই মনে করছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ থেকে চিকিৎসকেরা। শিশুরোগ চিকিৎসক প্রভাসপ্রসূন গিরি বলেন, ‘‘আবার বৃষ্টি হলে বিপদ তো বাড়বেই। কারণ, জমা জল নিষ্কাশনের জন্য কেউই তেমন উদ্যোগী হন না। করোনাকে প্রতিহত করতে গিয়ে মানুষ অন্য রোগ প্রতিরোধের বিষয়টা উপেক্ষা করে যাচ্ছেন। তাই শিশুদের বাড়ির লোকজনদের খুব সতর্ক থাকতেই হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সাধারণত ডেঙ্গি আক্রান্ত হলে সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকে না। কিন্তু এখন তেমনটা হচ্ছে না। জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকা শিশুর ডেঙ্গি পরীক্ষা করলে রিপোর্ট পজ়িটিভ আসছে। ডায়েরিয়াও হচ্ছে।’’

ম্যালেরিয়াতেও অনেক শিশু এ বার আক্রান্ত হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের শিশুরোগ চিকিৎসক দিব্যেন্দু রায়চৌধুরী। তাঁর কথায়, ‘‘ভাইরাসজনিত ম্যালেরিয়া ছাড়াও এ বার ফ্যালসিপেরাম ম্যালেরিয়ায় প্রচুর শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। এটি সরাসরি মস্তিষ্কে আঘাত করে। ফলে শিশুরা দ্রুত সঙ্কটজনক হয়ে পড়ছে।’’ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অনির্বাণ দলুইয়ের কথায়, ‘‘ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া দুটোই পুরনো রোগ। তা থেকে বাঁচার উপায় কী, সকলেরই জানা। শীতের মরসুম পড়ছে, অর্থাৎ ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার প্রকোপ আর থাকবে না, এমন ধারণা করাটাই ভুল। কারণ বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির জেরে জল জমার সঙ্গে মশাবাহিত রোগের মারাত্মক যোগসূত্র রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement