— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
কলকাতার বিভিন্ন ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে শনিবার থেকেই। শনি ও রবিবার মিলিয়ে কলকাতা পুর এলাকার ১৫টি ঘাটে ২৩৮০টি প্রতিমার বিসর্জন হয়ছে। তবে তার মধ্যেও আর জি কর-কাণ্ডের বিচারের দাবিতে প্রতিবাদে মুখর হয়েছে গঙ্গার ঘাট। আবার কখনও গঙ্গামুখী প্রতিমার গাড়ির সামনেই স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়েছে ধর্মতলা চত্বর।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন হাজার দুর্গাপুজো হয়। শনি ও রবিবারে বিভিন্ন ঘাট ছাড়াও বিভিন্ন পুকুরে হাতে গোনা কিছু প্রতিমার বিসর্জন হয়েছে। পুর আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, বাকি থাকা বেশিরভাগ প্রতিমা সোমবার বিসর্জন হয়ে যাবে। আর পুজো কার্নিভালে অংশ নেওয়া প্রতিমাগুলির বিসর্জন হবে মঙ্গলবার। তবে সোমবার বিকেল গড়াতেই বাবুঘাটের বাজেকদমতলা ঘাটে ভিড় বাড়তে থাকে। লক্ষ্যণীয় বিষয়, বিসর্জনে আসা অধিকাংশই বিচার চেয়ে সরব হন। দক্ষিণ কলকাতার লেক মার্কেটের একটি পুজোর প্রতিমা বিসর্জন দিতে এ দিন বাবুঘাটে এসেছিলেন দুই প্রবীণা সদস্যা প্রতিমা বন্দোপাধ্যায় ও প্রণতি সেন। প্রতিমার মতে, ‘‘আর জি করের ঘটনার বিচার চেয়ে আমাদের পুজো এ বার সাদামাটা ছিল। আমাদের কারও মন ভাল নেই। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত এক জনের বিরুদ্ধে চার্জশিটে নাম এসেছে। কিন্তু এমন ঘটনা কখনও একার পক্ষে ঘটানো সম্ভব নয়। মা দুর্গার কাছে আমাদের প্রার্থনা, আর জি করের বিচার করো।’’ আর প্রণতি বলেন, ‘‘ধর্মতলায় জুনিয়র চিকিৎসকেরা অনশনে বসেছেন। আমরা খেতে পারছি না। আর পাশেই রোড রোডে কিনা ঘটা করে পুজো কার্নিভাল হবে? এ বার কি কার্নিভাল বাতিল করা যেত না?’’
বৌবাজারের একটি পুজো কমিটির তরফে প্রতিমা নিয়ে ধর্মতলার অনশন মঞ্চ ছুঁয়ে এ দিন বাবুঘাটে পৌঁছন পুজো কমিটির সদস্যেরা। ওই পুজো কমিটির তরফে লীনা দাস বলেন, ‘‘আমাদের গাড়ি ধর্মতলার অনশন মঞ্চের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময়ে গাড়িতে থাকা আমরা সবাই বিচারের দাবিতে স্লোগান তুলেছি। বাবুঘাটে বিসর্জনের সময়েও প্রার্থনা করেছি, নির্যাতিতা যেন বিচার পান।’’ লীনার কন্যা ঈশিতা চক্রবর্তী বললেন, ‘‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনা কিছুতেই ভোলা যাচ্ছে না। গত দু’মাস ধরে বিভিন্ন প্রতিবাদ-সমাবেশে ছিলাম। কিন্তু দুর্গাপুজো তো বন্ধ করা যাবে না। তাই আর জি করের কথা মাথায় রেখে পুজো সাদামাটা ভাবে করা হয়েছে।’’ ময়দানের বিধানচন্দ্র মার্কেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিমার বিসর্জন হয় সন্ধ্যায়। বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ী সৌম্যজিৎ প্রধানের কথায়, ‘‘প্রতি বছর পুজোয় জাঁকজমক করে অনুষ্ঠান করি। এ বার সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল। একটাই দাবি, আর জি করের বিচার চাই।’’