অভিযান: মশার লার্ভা নিধনে পুরকর্মীরা। রয়েছেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায়। সোমবার সল্টলেকে। ছবি: শৌভিক দে
জুন পর্যন্ত ছবিটা ছিল স্বস্তির। বৃষ্টি একটু রাশ টানতেই মশার তাণ্ডবে সল্টলেকের বাসিন্দারা ভয়ে কাঁটা।
মাঝারি আকারের এক ধরনের মশার ঘাড়ে সাদা দাগ। তবে তার থেকেও জ্বালাচ্ছে বেশি কালো কালো খুদে মশা। কামড়ালেই জ্বালা করছে। বিধাননগর পুরসভায় পতঙ্গবিদ নেই। বাসিন্দারা কেউ কেউ নিজে থেকে মশার ছবি নিয়ে গিয়েছেন কলকাতা পুরসভার ভেক্টর কন্ট্রোল বিভাগে।
কলকাতা পুরসভার পতঙ্গবিদেরা জানিয়েছেন, ঘাড়ে সাদা দাগের মশার নাম এডিস ইজিপ্টাই। ডেঙ্গির জীবাণুবাহক মশা এটি। আর অন্যটি এডিস অ্যালবোপিকটাস। কলকাতা পুরসভার পতঙ্গবিদ দেবাশিস বিশ্বাস জানাচ্ছেন, ওই মশারা খুদে সন্ত্রাসবাদী। ক্ষেত্র বিশেষে ওই প্রজাতির মশাও ডেঙ্গি ভাইরাস বহন করতে সক্ষম বলে দবি দেবাশিসবাবুর।
কিন্তু বাড়িতে ওই মশা এল কোথা থেকে? পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, এডিস মশা জন্মায় বিভিন্ন পাত্রের মধ্যে জমা পরিষ্কার জলে। আর খুদে মশা বর্ষাকালে গাছের কোটরে, পাতার গায়ে ডিম পাড়ে। সল্টলেকে যে সব অঞ্চলে ঝোপঝাড় রয়েছে, সেখানেই ওই মশার উপদ্রব বেশি। এই বিষয়টি সল্টলেকের মানুষকে বোঝাতে এখন উদ্যোগী হয়েছেন পুরকর্তারা।
পুরসভা সূত্রে জানা যাচ্ছে, বাড়ির টবে বা অন্য কোনও পাত্রে জল জমানোর ব্যাপারে সল্টলেকবাসী এখন অনেকটাই সচেতন হয়েছেন। কিন্তু তাতেও কমছে না এডিস ইজিপ্টাই মশার বাড়বাড়ন্ত। সোমবারই যেমন সল্টলেকে ৩ নম্বর সেক্টরে ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে মশার আঁতুড়ঘরের সন্ধান পান বিধাননগর পুরসভার আধিকারিকেরা।
শ্রাবণী আবাসনের উল্টো দিকেই ওই প্রতিষ্ঠান। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ঢুকতেই চোখে পড়ে, সার দিয়ে সাজানো সুদৃশ্য টবে লাগানো রয়েছে গাছ। সেই টবের জলে কিলবিল করছে লার্ভা। প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে নির্মাণ কাজ চলছে। ভাঙা সামগ্রীর স্তূপে জমা জলে ডিম পেড়ে গিয়েছে মশা। মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে নির্মাণ সামগ্রীর যন্ত্রেও।
বিধাননগর পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) প্রণয় রায় বলেন, ‘‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই কেন্দ্রীয় সরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে কর্তৃপক্ষকে।’’ তিনি জানান, এখন সল্টলেকের বিভিন্ন সরকারি দফতর, আবাসন, শপিং মলে নিয়মিত অভিযান চালাবে পুরসভা।