শহরে বৃষ্টির প্রভাবে জলমগ্ন এম জি রোড। ছবি: রনজিৎ নন্দী।
দুপুরে মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টি। অথচ, সেই বৃষ্টিতেই বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ডুবে রইল শহরের একাংশ। যার জেরে গাড়ি চলাচলেও বিঘ্ন ঘটে। ভোগান্তির মধ্যে পড়েন অসংখ্য সাধারণ মানুষ।
কলকাতা পুরসভার ১৫টি নিকাশি পাম্পিং স্টেশনে এ দিন দুপুর ২টো থেকে ৩টে পর্যন্ত মোট বৃষ্টি হয়েছে ৭৫৯ মিলিমিটার। গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৫০.৬ মিলিমিটার। সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বালিগঞ্জ পাম্পিং স্টেশন এলাকায় (১১৪ মিলিমিটার)। উত্তর কলকাতার মার্কাস স্কোয়ারে ওই সময়ে বৃষ্টি হয়েছে ৬৫ মিলিমিটার। পামারবাজার ও তপসিয়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৭৮ ও ৭২ মিলিমিটার।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিনের এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে উত্তর কলকাতার মুক্তারামবাবু স্ট্রিট, আমহার্স্ট স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া কালীবাড়ি এলাকা-সহ বেশ কিছু ছোট রাস্তায় সন্ধ্যা পর্যন্ত জল জমে ছিল। বাদ যায়নি চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, এম জি রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, ব্রেবোর্ন রোড, এ জে সি বসু রোড, লালবাজার স্ট্রিট, পার্ক স্ট্রিট, শেক্সপিয়র সরণি এবং বিধান সরণিও। এই সমস্ত রাস্তায় দুপুরের পরে দীর্ঘক্ষণ জল জমে ছিল।
ভারী বৃষ্টির জেরে পার্ক স্ট্রিট উড়ালপুলের নীচে জওহরলাল নেহরু রোডেও দীর্ঘক্ষণ জল জমে থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। সেই সঙ্গে একবালপুর, বেলভেডিয়ার রোড-সহ ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের বেশ কিছু রাস্তাও জলমগ্ন ছিল। খাস কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে লাইসেন্স গেটের সামনে জল জমে থাকায় সাধারণ মানুষ থেকে পুরকর্মী, নাস্তানাবুদ হন সকলেই।
নিউ মার্কেটের হগ মার্কেটের সামনের রাস্তাও সন্ধ্যা পর্যন্ত জলমগ্ন থাকায় সমস্যায় পড়েন পথচারীরা। মেয়র পারিষদ (নিকাশি) তারক সিংহ বলেন, ‘‘এক শ্রেণির মানুষের অসচেতনতার জন্যই গালিপিটগুলি অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টির জল সরতে দেরি হচ্ছে। শহরের বিভিন্ন বড় হোটেল রাতে ম্যানহোল খুলে খাবারের বর্জ্য ফেলে। যার ফলে ম্যানহোল অবরুদ্ধ হয়ে পড়ছে। শীঘ্রই বরোভিত্তিক হোটেলের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসব। তাঁদের বলা হবে, এ ভাবে খাবারের বর্জ্য ফেললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এ দিনের বৃষ্টিতে জল জমে পাতিপুকুর আন্ডারপাসেও যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আন্ডারপাসের কলকাতামুখী লেনে জল জমে গেলে একটি গাড়ি সেখানে আটকে পড়ে। পাশের লেন দিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ উভয় মুখে গাড়ি চলাচল করে। পরে জল নামলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। যদিও নিত্যযাত্রীদের মতে, বর্ষায় বার বার ওই আন্ডারপাসে একই সমস্যা দেখা যায়। তাই এর স্থায়ী সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছেন তাঁরা।