আড়াআড়ি ভাবে রাস্তায় আটকে যায় বিমানটি। —নিজস্ব চিত্র।
মাঝরাতে পেল্লাই এক বিমান এগিয়ে আসছে যশোর রোড ধরে। গায়ে লেখা, এয়ার ইন্ডিয়া, ভারতীয় ডাক। সঙ্গে সঙ্গেই যশোর রোডের দু’টি লেনেই আটকে গেল যান চলাচল। সেই যান চলাচল স্বাভাবিক হতে কেটে গেল প্রায় তিন ঘণ্টা। ঠান্ডার মধ্যে শুক্রবার মাঝরাতে ওই বিমানের কারণে ভোগান্তি পোহাতে হল যাত্রীদের।
কর্মসূত্রে বহরমপুরে থাকেন শুভঙ্কর মুখোপাধ্যায়। সপ্তাহান্তে বাড়ি ফেরেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে বিক্ষোভের জেরে বহরমপুর-কলকাতা ট্রেন চলাচল বন্ধ। ফলে এই সপ্তাহে তিনি কোনওমতে বাসের একটা টিকিট জোগাড় করে দমদমের বাড়ি ফিরছিলেন। শুভঙ্কর জানান, শুক্রবার রাতে মধ্যমগ্রামের দোলতলা এবং বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের মাঝামাঝি বাস পৌঁছতেই বিপত্তি বাধে। দেখা যায়, পিঠের উপর শিকল দিয়ে বাঁধা পেল্লাই বিমান নিয়ে রাস্তা পারাপারের চেষ্টা চালাচ্ছে একটি ট্রেলার। কিন্তু ডিভাইডারের মধ্যবর্তী ফাঁকা জায়গা দিয়ে ট্রেলারটি ঢোকাতে গেলে, সেটি আড়াআড়ি ভাবে আটকে যায়।
ফলে বন্ধ হয়ে যার দু’টি লেন। তাতে আটকে পড়ে বহু গাড়ি। এর পর কোনও ভাবে পাশ কাটিয়ে ট্রেলারটিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন চালক। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। শুভঙ্কর বলেন, ‘‘শেষমেশ বিমানবন্দর থেকে দু’টি ক্রেন আনা হয়। সেগুলির সাহায্যে বিমানসুদ্ধ ট্রেলারটিকে দু’দিক থেকে একটু একটু করে উপরে তুলে শুরু হয় ঘোরানোর কাজ। বেশ খানিক ক্ষণ কসরতের পরে ট্রেলারটিকে উল্টো দিকের রাস্তায় ঘোরানো সম্ভব হয়। তার পর সেটিকে নিয়ে এয়ারপোর্ট মোড়ের দিকে রওনা দেন চালক। কিন্তু তত ক্ষণে ঘড়ির কাঁটা ৩টে ছুঁইছুঁই। প্রায় তিন ঘণ্টা জলে।’’
এ বিষয়ে পুলিশ এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, পরিত্যক্ত ওই বিমানটি এয়ার ইন্ডিয়ার বোয়িং ৭৩৭। এত দিন ভারতীয় ডাক পরিষেবার কাজে ব্যবহার করা হত সেটি। কিন্তু পুরনো হয়ে যাওয়ায়, বাতিল করা হয়েছিল বিমানটিকে। যে অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে বিমান বানানো হয়, তা খুবই দামি। তাই সম্প্রতি একটি বেসরকারি সংস্থা সেটি কিনে নেয়। শুক্রবার দুপুর দুটো নাগাদ হ্যাঙার থেকে বিমানটিকে নামানো হয়। তার পর রাতে ওই সংস্থা ট্রেলার করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখনই বিপত্তি বাধে।